
অবশেষে ৩২ বছর-বয়সী ইউপিএসসি অ্যাসপিরেন্ট হত্যাকাণ্ড রহস্যের সমাধান করল দিল্লি পুলিশ। চলতি মাসের গোড়ার দিকে দিল্লির গান্ধী বিহারের একটি অ্যাপার্টমেন্টে পোড়া অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল তার দেহ। প্রাথমিকভাবে ঘটনাকে অগ্নিকাণ্ড বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু পরে পুলিশ বুঝতে পারে যে, এটি প্রতিশোধের উদ্দেশ্যে করা একটি ভয়ঙ্কর অপরাধ।
প্রসঙ্গত, নিহত ব্যক্তির নাম ছিল রামকেশ মীনা। তাকে তার লিভ-ইন পার্টনার এবং অন্য দু'জন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ। তারপর সেই হত্যাকে দুর্ঘটনা বলে চালাতে চেয়েছিল তারা। তাই ফ্ল্যাটে আগুন ধরানো হয়েছিল। পুলিশের মতে, প্রাথমিকভাবে যাকে এয়ার-কন্ডিশনার বিস্ফোরণ বলে মনে করা হয়েছিল, তা আসলে ছিল একটি নাটক।
এতদিনে কী সামনে এল?
মীনার মৃতদেহ পাওয়ার কয়েকদিন পর পুলিশ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে। এদের মধ্যে ছিল তার ২১ বছর বয়সী লিভ-ইন পার্টনার অমৃতা চৌহান, তার প্রাক্তন প্রেমিক সুমিত কাশ্যপ (২৭), এবং তাদের বন্ধু সন্দীপ কুমার (২৯)। এরা সবাই উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদের বাসিন্দা।
কেন হত্যা?
জেরায় অমৃতা চৌহান জানিয়েছেন, রামকেশ তার কিছু আপত্তিকর ভিডিও এবং ছবি নিজের ল্যাপটপে রেখেছিল। সেই ভিডিও এবং ফটো ডিলিট করতে বলেন অমৃতা। তবে সেটা করেননি তিনি। তাতেই রামকেশের হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন।
শুধু তাই নয়, এই হত্যার আগে কয়েকটি ওয়েব সিরিজ দেখবেন অমৃতা। সেই মতো মার্ডার হত্যাকে অ্যাক্সিডেন্ট দেখানোর পরিকল্পনা করেন।
কী দেখে সামনে এল ঘটনা?
অমৃতাদের এই কৃতকার্য ধরা পড়ে যায় সিসিটিভিতে। এমনকী তাদের ফোনের লোকেশনও ঘটনাস্থলের কাছে ছিল বলেই জানা যাচ্ছে।
আর জেরার সামনে দাঁড়িয়ে অমৃতা নিজের অপরাধ স্বীকার করে নেয় বলে খবর। তিনি তদন্তকারীদের জানান, প্রাক্তন প্রেমিক সুমিত এবং সুমিতের বন্ধু মিলে এই ঘটনা ঘটায়।
অ্যাক্সিডেন্টের মতো দেখাতে চেয়েছিল
অমৃতা ফরেন্সিক সায়েন্সের ছাত্রী। তাই তিনি ভালই জানেন যে কীভাবে একটা মার্ডারকে অ্যাক্সিডেন্ট বলে চালানো যায়। তাই তারা সবার প্রথমে রমাকেশের হত্যা করে। তারপর তার শরীরে ঘি,মদ এবং অন্যান্য দাহ্য পদার্থ মাখানো হয়। এখানেই শেষ নয়, মৃতদেহের কাছে গ্যাস সিলিন্ডারের পাইপলাইনও রাখা হয়। তারপর জ্বালানো হয় আগুন।
ব্লাস্টের টাইমিং...
সুমিতের বন্ধু সন্দীপ গ্য়াসের কাজ করতেন। তাই তিনি জানতেন যে গ্যাস জ্বালানোর কতক্ষণ পরে হতে পারে বিস্ফোরণ। ও দিকে গোটা ঘটনা ঘটানোর পর অমৃতা দরজার একটা ছোট ছিদ্র করে। তারপর বাইরে বেরিয়ে দরজা ভিতর থেকে লাগিয়ে দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে পুলিশ হার্ড ডিস্ক, ট্রলি ব্যাগ, দুটি মোবাইল এবং মৃতের শার্ট উদ্ধার করেছেন।