
ইনস্টাগ্রামে আলাপ। যুবতীর সঙ্গে দেখা করতে ট্যাক্সি ভাড়া করে মধ্যপ্রদেশ থেকে মেদিনীপুর এসেছিলেন বছর ১৮-র যুবক। তারপর থেকে নিখোঁজ। অবশেষে ক্যাব চালককে জেরা করে মিলল তার কঙ্কাল। ক্যাব চালকের দাবি, মেয়েটির পরিবার ছেলেটিকে মারধর করেছিল। তারপর তিনি ছেলেটিকে আহত অবস্থায় গাড়িতে তুলে নিয়ে ফিরছিলেন। পথে তার মৃত্যু হয়। তখন ভয়ে জঙ্গলেই দেহ ফেলে পালান তিনি। এমনটাই দাবি করেছেন পুলিশের কাছে।
ছিন্দওয়ারার গুরাইয়ার এক বাসিন্দা গত ৮ অগাস্ট দেহাত থানায় তাঁর ছেলের নামে মিসিং ডায়েরি করেন। ওই ব্যক্তি জানান, তাঁর ছেলে গজেন্দ্র চৌধুরী (১৮ বছর) পশ্চিমবঙ্গে যাওয়ার জন্য বেরিয়েছিলেন। তারপর থেকে তাঁর আর খোঁজ নেই।
সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে মিসিং ডায়েরি রুজু করে। পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
ক্যাবেই ১,১০০ কিমি!
মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়ারা থেকে মেদিনীপুর আসার জন্য ক্যাব ভাড়া করেছিলেন ওই যুবক। পরিবারের সদস্যরা সেটুকু জানতেন। পুলিশকে সেটা জানাতেই প্রথমেই ক্যাব চালককে খুঁজে বের করা হয়। অনিকেত নামের ওই ড্রাইভারকে এরপর টানা জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
জেরায় ট্যাক্সি চালক অনিকেত জানান, গজেন্দ্র মেদিনীপুর পৌঁছে তাঁর সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাপ হওয়া মেয়েটির সঙ্গে দেখা করেন। কিন্তু মেয়ের পরিবারের লোকজন সেটা জানতেই গজেন্দ্রকে ভীষণ মারধর করে। এমনটাই দাবি অনিকেতের।
ট্যাক্সি চালকের কথায়, 'এর পর আহত গজেন্দ্রকে নিয়ে আমি মধ্যপ্রদেশের পথে ফেরত আসতে চেয়েছিলাম। কিন্তু রাস্তাতেই গজেন্দ্র মারা যায়... গাড়ির ভিতরেই। আমি তখন আতঙ্কে গজেন্দ্রর দেহ জঙ্গলে ফেলে দিই। তারপর গাড়ি নিয়ে ছিন্দওয়াড়ায় ফিরে আসি।'
চালকের দাবি কতটুকু সত্যি তা এখনও তদন্তাধীন। কিন্তু দেহ উদ্ধারের জন্য সঙ্গে সঙ্গে মাঠে নামে পুলিশ। প্রথমেই মেদিনীপুরের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ছিন্দওয়াড়া দেহাত থানার ইনচার্জ। এরপর সদলবলে পৌঁছান মেদিনীপুরে। সঙ্গে আনেন ট্যাক্সি চালককেও।
এরপর তার কথা মতোই জঙ্গলের নির্দিষ্ট স্থানে তল্লাশি চালিয়ে কঙ্কাল-দেহ উদ্ধার হয়। কাছেই নিহতের জুতো ও ঘড়ি খুঁজে পায় পুলিশ। ছবি দেখে গজেন্দ্রর পরিবার তাকে শনাক্ত করে।
ক্যাব চালকের দাবি নিয়ে আপাতত তদন্তে নেমেছে পুলিশ। মেদিনীপুর পুলিশের সঙ্গে যৌথ তদন্ত চালানো হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।