ক্রুজ রেভ পার্টিতে (Mumbai cruise rave party) মাদক সরবরাহের জন্য এক পেডলারকে আটক করেছে এনসিবি (NCB)। সংস্থার মতে, এই পেডলার ২৫ জনের কাছে ড্রাগ বিক্রি করেছিল। এর কাছ থেকে অনেক ধরনের মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। শ্রেয়াস নায়ার নামে ওই পেডলার জেরায় স্বীকার করেছে, ডার্ক ওয়েবের (dark web) মাধ্যমেই সে মাদকের অর্ডার পায় এবং বিটকয়েনে (Bitcoin) তাকে পেমেন্ট করা হয়েছে। কিন্তু যে এই অর্ডার দিয়েছিল তাকে এখন ধরা যায়নি।
কেন ধরা যাচ্ছে না?
প্রকৃতপক্ষে, আমরা যে পরিমাণ ইন্টারনেট ব্যবহার করি, তা মোট ইন্টারনেটের মাত্র ছয় শতাংশ। ডার্ক এবং ডিপ ওয়েব ইন্টারনেটে রয়েছে বাকি ৯৪ শতাংশ। ইন্টারনেট তিনটি স্তরে বিভক্ত। এর প্রথম স্তর সারফেস ওয়েব। এটি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের একই ৬% যা সকলে ব্যবহার করেন। এর মাধ্যমে ইন্টারনেটে আপনি যে কোনও ব্রাউজার বা সার্চ ইঞ্জিন থেকে যে কোনও কিছু অনুসন্ধান করতে পারেন।
ইন্টারনেটের দ্বিতীয় স্তরকে ডিপ ওয়েব বলা হয়
ইন্টারনেটের দ্বিতীয় স্তরকে ডিপ ওয়েব বলা হয়। এর অ্যাক্সেস সহজ নয় কারণ এটি এইচটিএমএল অর্থাৎ হাইপার-টেক্সট মার্কআপ ল্যাঙ্গুয়েজে (Hyper-text Markup Language) রয়েছে। ব্যাংঙ্কিং ওয়েবসাইটের ডেটা, ই-মেইল ডেটা, এই সবই HTML কম্পিউটার কোডিংয়ে করা হয়। সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে এর তথ্য পাওয়া যাবে না। ইন্টারনেটের এই দ্বিতীয় স্তর, ডিপ ওয়েব, এর নাম দেন মিশেল কে বার্গম্যান।
এর পর আসে ইন্টারনেটের তৃতীয় এবং শেষ স্তর যাকে ডার্ক ওয়েব বলা হয়। সার্চ ইঞ্জিন থেকেও এর তথ্য অনুসন্ধান করা যাবে না। এর জন্য বিশেষ প্রবেশাধিকার প্রয়োজন। এর অ্যাক্সেসের জন্য, 'TOR'-এর মত সফটওয়্যারের সাহায্য নিতে হয়। এই সফটওয়্যারে ৩০ হাজারেরও বেশি লুকানো ওয়েবসাইট রয়েছে, যেখানে সবকিছু পাওয়া যায়। সাধারণ ব্যবহারকারীদের ডার্ক ওয়েব ব্যবহার করা নিষেধ।
ডার্ক ওয়েব কখন শুরু হয়েছিল?
প্রায় ১০ বছর আগে এই ডার্ক ওয়েব শুরু হয়েছিল। সাইবার অপরাধীরা বিভিন্ন অপরাধের জন্য ডার্ক ওয়েব ব্যবহার শুরু করে, এখন এটিকে ইন্টারনেটের আন্ডারওয়ার্ল্ডও বলা হয়। কারণ অপরাধ সংক্রান্ত সব কিছুই এখানে পাওয়া যায়। এটি বিভিন্ন অবৈধ কাজ, অস্ত্র ব্যবসা, কালোবাজারি এবং মাদক ব্যবসার জন্য ব্যবহৃত হয়। এর অ্যাক্সেস সহজ নয়, তাই পুলিশের পক্ষে এই ধরনের অপরাধমূলক বা অবৈধ কারবার ট্র্যাক করা কঠিন। এ জন্যই সাইবার অপরাধীরা ডার্ক ওয়েব বেশি ব্যবহার করে।
এর আরেকটি দিক হল সুপরিচিত এবং হাই প্রোফাইল গ্রাহকরা তাদের পরিচয় গোপন করার জন্য এই ধরনের পেমেন্ট মোড ব্যবহার করেন। যদিও বলিউডে মাদক আসে পুরানো এবং বিশ্বস্ত পেডলারদের মাধ্যমে। কারণ এটি দাবি করা হয় যে বলিউড বাজার দরের থেকে অনেক গুণ বেশি দামে ড্রাগ কেনে।