এ যেন বাঘের ঘরে ঘোগের বাস! ধরা পড়ল আরও এক পাক গুপ্তচর চক্র। সোমবার হরিয়ানার নুহ-তে এক সন্দেহভাজন ব্যক্তি ধরা পরেন। গত কয়েক দিনে একাধিক গুপ্তচর গ্রেফতার হয়েছে। তার মধ্যে এই নুহ এলাকা থেকেই ধরা পড়ল দু’জন। মোট তিনজনের নামে মামলা রুজু হয়েছে। এদের মধ্যে দু’জন পাকিস্তান হাইকমিশনের কর্মী বলে জানা গিয়েছে।
গ্রেফতারের পর এক ভিডিও স্বীকারোক্তিও প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে ধৃত ব্যক্তি জানায়, সে একাধিকবার পাকিস্তানে গিয়েছে এবং সেদেশের আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এমনকি তাদের সিম কার্ডও দিয়েছে। ধৃত এটাও স্বীকার করে যে, এক পাকিস্তানি অফিসারের সঙ্গে সে দেখা করেছিল। তার কাছ থেকে টাকাও নিয়েছে। তাকে সেনাসংক্রান্ত স্পর্শকাতর তথ্য পাঠানোর বরাত দেওয়া হয়েছিল।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পর থেকেই একাধিক সন্দেহভাজনকে পাক গুপ্তচরদের সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগে ধরা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন হরিয়ানার হিসারের ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রা। তিনি একটি ট্র্যাভেল ব্লগিং চ্যানেল চালাতেন। সেই চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা তিন লক্ষেরও বেশি। তদন্তকারীদের দাবি, তিনি দিল্লিতে পাক অফিসার এহসান-উর-রহিম ওরফে দানিশের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি দুইবার পাকিস্তানে গিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ।
জ্যোতি মালহোত্রার পাশাপাশি আরও পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন পাঞ্জাবের ৩২ বছর বয়সী বিধবা গুজালা, যিনি পাক গুপ্তচরের সঙ্গে তথ্যের বিনিময়ে টাকা নিয়েছেন। দানিশের হয়ে কাজ করতেন যামিন মহম্মদ। ভিসা ও আর্থিক লেনদেনের দায়িত্বে ছিলেন। কৈথালের দেবেন্দর সিং ধিলন নামের এক শিখ ছাত্র পাকিস্তানে তীর্থযাত্রার সময় এই কাজে যোগ দেন বলে অভিযোগ। তিনি পাতিয়ালার সেনা ক্যান্টনমেন্টের ভিডিও পাঠাতেন।
নুহ-র ২৬ বছরের আর্মানও ধৃতদের একজন। তার ফোন থেকে সেনাবাহিনী ও সামরিক তৎপরতা সংক্রান্ত তথ্য, ছবি ও ভিডিও পাওয়া গেছে, যেগুলি পাকিস্তানি নম্বরে পাঠানো হয়েছে।
১৫ মে হরিয়ানার পানিপথ থেকে ধরা হয় ২৪ বছর বয়সি নওমান ইলাহীকে। তিনি উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা এবং একটি ফ্যাক্টরির নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে কাজ করতেন। তার বিরুদ্ধে পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগ উঠেছে।
এর আগে ৪ মে পঞ্জাব পুলিশ গ্রেফতার করে পালক শের মসীহ এবং সুরজ মসীহকে। তারা অমৃতসরের সেনা ক্যান্টনমেন্ট ও বিমান ঘাঁটির ছবি পাকিস্তানে পাচার করেছে বলে অভিযোগ।
আরও এক গুরুত্বপূর্ণ গ্রেফতার হয়েছে ১৮ মে, উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদ থেকে। ধৃত শেহজাদ বহুবার পাকিস্তান সফর করেছেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে। তিনি কসমেটিক্স, কাপড়, মশলা ইত্যাদি পণ্যের অবৈধ সীমান্তপারের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।