মুহূর্তে ওলটপালট মহারাষ্ট্রের পুনের এক ৫২ বছরের আইটি কর্মীর জীবন। অনলাইন শেয়ার ট্রেডিংয়ের নামে এক ভয়ঙ্কর প্রতারণার ফাঁদে পড়ে হারালেন ৩ কোটি ৬৬ লক্ষ টাকা! দুই-আড়াই মাস ধরে এই জালিয়াতির পর অবশেষে পুলিশে অভিযোগ জানান তিনি। ঘটনাটি ঘটেছে পুনের হাদপসার এলাকায়। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ওই ব্যক্তি সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোরাঘুরি করার সময় এক বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন দেখতে পান। সেখানে ‘দ্রুত লাভের সুযোগ’ বলে দাবি করা হয়েছিল। আগ্রহবশত তিনি লিঙ্কে ক্লিক করতেই তাঁকে একটি মেসেজিং অ্যাপে যুক্ত করে দেওয়া হয়। সেই গ্রুপে একের পর এক পোস্ট আসছিল;'আজ এত লাভ হলো', 'কাল আবার শেয়ার দাম বাড়বে';এমন সব দাবি। দেখে মনে হচ্ছিল, সবাই যেন প্রচুর টাকা রোজগার করছে।
কিছুদিন পর ওই আইটি পেশাজীবী গ্রুপের অ্যাডমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখনই তাঁর হাতে আসে এক ‘ট্রেডিং অ্যাপ’-এর লিঙ্ক। বলা হয়, এই অ্যাপের মাধ্যমেই বিনিয়োগ করলে দ্রুত লাভ হবে। প্রথমে তিনি অল্প অল্প করে বিনিয়োগ করতে শুরু করেন। অ্যাপটিতে দেখানো হচ্ছিল যে, তিনি নাকি হাজার হাজার টাকা লাভ করছেন।
এইভাবে বিশ্বাস বাড়তেই প্রতারকরা তাঁকে আরও বড় অঙ্কের টাকা বিনিয়োগের পরামর্শ দেয়;‘প্রিমিয়াম শেয়ার’ আর ‘আইপিও’-তে। বিনিয়োগের জন্য তাঁকে একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে বলা হয়। প্রতিটি ধাপে অ্যাপে নাকি লাভের সংখ্যা আরও বেড়ে যাচ্ছিল।
কিন্তু আসল সমস্যা শুরু হয়, যখন তিনি টাকা তুলতে চান। হঠাৎ করে অ্যাপে ‘উইথড্র’ অপশন বন্ধ হয়ে যায়। বলা হয়, টাকা তুলতে গেলে আরও কিছু টাকা দিতে হবে। তখনই সন্দেহ হয় তাঁর। বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনও উত্তর না পেয়ে তিনি বুঝতে পারেন, সবটাই প্রতারণা।
অবশেষে তিনি পুনে সাইবার থানায় অভিযোগ জানান। তদন্তে জানা গিয়েছে, পুরো অ্যাপটি ছিল ভুয়ো। দূর থেকে সেটি নিয়ন্ত্রণ করত প্রতারক চক্রটি। পুলিশের মতে, এ ধরনের অনলাইন ট্রেডিং প্রতারণা এখন ভয়াবহ আকার নিচ্ছে।
পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, 'এই ধরনের চক্র পেশাদারদের টার্গেট করে, কারণ এঁরা সহজে বড় অঙ্ক বিনিয়োগ করেন। দ্রুত লাভের লোভেই সর্বনাশ হয়।'
এর আগেও পিম্পরি এলাকায় একই কায়দায় এক ব্যক্তির কাছ থেকে ২.১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছিল। তাই পুলিশের পরামর্শ;যে কোনও অনলাইন বিনিয়োগের আগে সংস্থার সত্যতা যাচাই করা জরুরি। একটুখানি অসাবধানতাই হতে পারে কোটি টাকার ক্ষতির কারণ।