ভিনরাজ্যে অপরাধ করে বাংলায় গা ঢাকা। সাম্প্রতিক অতীতে এমন বেশ কয়েকটি কেস শিরোনামে এসেছে। এবার সেই তালিকায় হল নবতম সংযোজন। বৃহস্পতিবার দুপুরে সল্টলেকে যা ঘটল, তা কোনও ক্রাইম থ্রিলারকেও হার মানাবে। রাজস্থানের এক ব্যবসায়ী খুনে অভিযুক্ত ৩ দুষ্কৃতীকে পাকড়াও করল কলকাতা পুলিশের বিশেষ টিম। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ পূর্বাচল আবাসনের আশপাশে পজিশন নেয়। কয়েক ঘণ্টার টানটান অভিযানের পর ধরা পড়ে ৩ দুষ্কৃতী। তবে এক অভিযুক্ত এখনও পলাতক।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের সকলেই গুজরাতের বাসিন্দা। রাজস্থানের কুচমান এলাকায় এক ব্যবসায়ীকে খুন করে কলকাতায় পালিয়ে আসে তারা। তাদের উদ্দেশ্য ছিল কিছুদিন এখানে লুকিয়ে থাকা, তারপর অন্য রাজ্য বা দেশে পালিয়ে যাওয়া। কিন্তু কলকাতা পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপে তাদের পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে অভিযান শুরু হয়। প্রথমে দুই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়। এরপরই বাকি দুইজনকে ধাওয়া করা। এক দুষ্কৃতী হঠাৎ পূর্বাচল আবাসনে ঢুকে পড়ে। ছাদে উঠে পালানোর চেষ্টা করে সে। পুলিশ তার পিছু নেয়। কার্নিশ ধরে নিচে নামার সময়ই তাকে ধরে ফেলে পুলিশ। ততক্ষণে রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে যান আবাসনের বাসিন্দারা। অনেকেই জানলা দিয়ে পুরো ঘটনা দেখেন। আবার অনেকে ভয়ে দরজা, জানলা বন্ধ করে দেন। পরে পুলিশের গাড়ি এলাকায় ঢুকতেই মানুষ বেরিয়ে আসেন।
সূত্রের খবর, এই গ্যাং রা জস্থানে খুনের পর থেকেই কলকাতায় আশ্রয় নিয়েছিল। কে তাদের লুকিয়ে থাকতে সাহায্য করেছে? জানার চেষ্টা চলছে। পুলিশ সূত্রে খবর, দুষ্কৃতীরা গত কয়েকদিন ধরে সল্টলেকেই ছিল।
এখনও একজন দুষ্কৃতী পলাতক। পুলিশের অনুমান, সেও সল্টলেকের আশপাশেই কোথাও গা ঢাকা দিয়েছে। তাকে ধরতে জোরকদমে তল্লাশি চলছে। ফলে এলাকার মানুষদের মনে আতঙ্ক। রাতে অনেকেই জানলা-দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়েছেন।
তবে পুলিশের দাবি, সাধারণ মানুষকে ভয় পাওয়ার কারণ নেই। ধৃতদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাকি অভিযুক্তকেও খুব শিগগির ধরা যাবে।
এর আগেও নিউটাউন ও সল্টলেক এলাকায় বড় দুষ্কৃতী দলের আশ্রয়ের নজির রয়েছে। ২০২১ সালে এখানেই পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছিল পাঞ্জাবের কুখ্যাত গ্যাংস্টার জয়পাল ভুল্লার। এবার ফের সেই আতঙ্ক ফিরল শহরতলির শান্ত পাড়ায়। ফলে সল্টলেকে নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবিও উঠছে বাসিন্দাদের মধ্যে।