Advertisement

Train Serial Killer: ট্রেনে অকারণে যাত্রী খুন-ধর্ষণ করাই 'শখ', বলছে বালির তবলাবাদকের খুনি

হাওড়া স্টেশনের কাছে, কাটিহার এক্সপ্রেসে বালির প্রৌঢ় খুন। খবর প্রকাশিত হতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। পরে এর পিছনে জড়িত অভিযোগে গত ২৪ নভেম্বর এক সিরিয়াল কিলারকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

ট্রেনেই ঘুরত এই সিরিয়াল কিলার। ট্রেনেই ঘুরত এই সিরিয়াল কিলার।
Aajtak Bangla
  • কলকাতা,
  • 29 Nov 2024,
  • अपडेटेड 5:45 PM IST

দৃশ্য এক: হাওড়া স্টেশনের কাছে, কাটিহার এক্সপ্রেসে বালির প্রৌঢ় খুন। ধারাল অস্ত্রের কোপ।খবর প্রকাশ হতেই শোরগোল।

দৃশ্য দুই: গুজরাটের উদভাড়া রেল স্টেশনে লাইনের ধারে ১৯ বছরের তরুণীর রক্তাক্ত দেহ।খুন-ধর্ষণ...

এই দুই কেসেই জড়িত একই ব্যক্তি। অবাক হচ্ছেন? আসলে অবাক হওয়ার মতোই ঘটনা। গত গত ২৪ নভেম্বর এমনই এক 'সিরিয়াল কিলার'কে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুধু এই ২টিই নয়।মাত্র এক মাসেই মোট ৫টি খুনের কথা স্বীকার করেছে সে। সাম্প্রতিক অতীতে এমন ভয়ানক সিরিয়াল কিলারের কেস দুঁদে পুলিশ অফিসাররাও মনে করতে পারছেন না। এ যেন কোনও ওটিটি ক্রাইম থ্রিলারের সামিল। 

শুধু খুনই নয়। খুনের পর মৃতদেহের ধর্ষণেও অভিযুক্ত এই রাহুল সিং জাট। হরিয়ানার রোহতকে বাড়ি। তবে ইদানিং তার বাড়ি ছিল ট্রেন আর রেলস্টেশন। তাই একাধিক অভিযোগ পেয়েও তাকে বাগে আনতে পারছিল না পুলিশ। এর কার্যকলাপ শুনলে আপনি শিউড়ে উঠবেন। 

গত ১৪ নভেম্বর উদভাড়া রেল স্টেশনের কাছে এক ১৯ বছরের তরুণীর দেহ মেলে। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, টিউশন থেকে ফিরছিলেন ওই তরুণী। সন্ধ্যা থেকে নিখোঁজ ছিলেন। আরও তদন্তে জানা যায়, পিছন থেকে আঘাত করে তাঁকে আহত করা হয়েছিল। তারপর ধর্ষণ ও খুন করা হয়। সম্ভবত খুনের পরেও ফের দেহ ধর্ষণ করা হয়। 

ঘটনাস্থল থেকে একটি টিশার্ট এবং ব্যাগ পায় পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজে সন্দেহভাজনের মুখের স্পষ্ট ছবিও পেয়ে যায়।

সাধারণত এমন অপরাধীদের আগেও কোনও না কোনও ট্র্যাক রেকর্ড থাকে। সেটা ঘাঁটতেই দেখা যায়, একসময় এই ব্যক্তি জেলে ছিলেন। সুরাটের লাজপুর সেন্ট্রাল জেলের এক আধিকারিক ছবি দেখেই চিনে ফেলেন। এতেই বড় সূত্র হাতে পেয়ে যায় পুলিশ। এই বছরই জেল থেকে ছাড়া পেয়েছিল সে। 

ছবি, পরিচয় পেয়ে গেলে পুলিশের পক্ষে সাধারণ অপরাধীকে খুঁজে বের করা খুব কঠিন কিছু নয়। কিন্তু এক্ষেত্রে সমস্যা ছিল একটাই। রাহুল জাট কোনও সাধারণ অপরাধী ছিল না। ট্রেনে-ট্রেনেই সে ঘুরে বেড়াত। ফলে নিয়মিত লোকেশন বদল হওয়ায় তাকে ট্র্যাক করাটাও বেশ কঠিন ছিল। 

Advertisement

তবে ট্রেন ও স্টেশনে আজকাল ঢালাও সিসিটিভি। সেটাই কাজে লাগিয়ে তার লোকেশন ধরে ফেলে পুলিশ। গত ২৪ নভেম্বর রাতে, ব্যাপী রেল স্টেশনের পার্কিং লট থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশ জানত, কিশোরীর ধর্ষণ-খুনে জড়িত ওই ব্যক্তি। কিন্তু জেরায় সে এমন কিছু কথা বলল, যে রীতিমতো হকচকিয়ে গেলেন অফিসাররা। কেন?

'আমরা জানতে পেরেছি যে, অভিযুক্ত ট্রেন ও স্টেশনে আরও ৪টি খুনের কেসে জড়িত ছিল। কর্ণাটক, পশ্চিমবঙ্গ, তেলেঙ্গানা ও মহারাষ্ট্রে,' জানালেন এক পুলিশ আধিকারিক। 

গ্রেফতারের মাত্র একদিন আগেই তেলেঙ্গানার সেকেন্দ্রাবাদ রেল স্টেশনের কাছে একটি ট্রেনে একজন মহিলাকে লুট করে খুন করেছিল।

নভেম্বরে হাওড়া রেলওয়ে স্টেশনের কাছে কাটিহার এক্সপ্রেসে এক প্রৌঢ়কে ধারাল অস্ত্র দিয়ে খুন করে। 

হাওড়া স্টেশনের কাছে কাটিহার এক্সপ্রেস থেকে বালির তবলাবাদকের দেহ উদ্ধার হয়।

অক্টোবরে, ট্রেনে একজন মহিলাকে ধর্ষণ ও খুনের কথা স্বীকার করেছে সে। মহারাষ্ট্রের সোলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের কাছে।

জেরায় জানা গিয়েছে, ট্রেনে যাত্রীদের একা পেলেই সে লুটপাট চালাত। মহিলাদের ধর্ষণ করত, বিশেষত বিশেষভাবে সক্ষম যাত্রীদের কোচে টার্গেট করত। 

ট্রেনে-ট্রেনে ঘুরে বেড়ানোয় এবং বিভিন্ন স্টেশনে রাত কাটাতো। ফলে পুলিশের পক্ষে তাকে ট্র্য়াক করাও অনেক কঠিন ছিল। পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, হরিয়ানা, রাজস্থান এবং কর্ণাটক পুলিশের ইউনিট নিয়ে বিশাল তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। বাপী, ভালসাদ, সুরাট এবং উদবাদায় ২,০০০ সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করা হয়। সেই থেকেই শেষ পর্যন্ত তার হদিশ মেলে।

অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এক ডজনেরও বেশি কেস রেজিস্টার্ড আছে। গত এক মাসে ৫টি খুনের কথা সে নিজের মুখে স্বীকার করেছে। 

জানা গিয়েছে, এর আগে এক অপরাধের ঘটনায় সে জেলে ছিল। জেল থেকে ছাড়া পেতেই ফের কুকীর্তি শুরু করে। ক্লাস ৫ পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে রাহুল। ছোট থেকেই নানা অপরাধমূলক কাজ, চুরি-ছিনতাই করত। সেই কারণে তার পরিবারও তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখেনি।

Read more!
Advertisement
Advertisement