শ্রদ্ধা ওয়াকার হত্যা মামলার তদন্তে দিল্লি পুলিশ দিনরাত এক করেছে। এরপর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে, অর্থাৎ ৭৫ দিনের মধ্যে আদালতে ৬ হাজার পৃষ্ঠার চার্জশিট দাখিল করা হয়। খুনের দিন ঠিক কী ঘটেছিল, তাও সামনে চলে এসেছে। অর্থাৎ ১৮ মে কী হয়েছিল? সেদিন শ্রদ্ধা ও আফতাবের মধ্যে কী ঘটেছিল যে সে তার প্রেমিকাকে খুন করেছিল। সে শুধু হত্যাই করেনি, নির্দয়ভাবে তার লাশ টুকরো টুকরো করে সে। চলুন জেনে নিই সেই দিনের গল্প।
ঘটনার ঠিক একদিন আগে কী হয়েছিল তা প্রথমে জেনে নিন। আসলে শ্রদ্ধা এবং আফতাবের দেখা হয়েছিল একটি সামাজিক এবং ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে। এর পর দুজনেই একে অপরের কাছাকাছি আসে। তারপর দুজনে একসঙ্গে থাকতে শুরু করে। কিছুদিন পর দুজনেই মুম্বই ছেড়ে দিল্লি চলে আসে। আফতাবের চাকরিও শুরু হয়েছিল দিল্লিতে।
১৭ মে ২০২২
দিল্লিতে এসেও শ্রদ্ধা ওয়াকারের মোবাইলে সেই অ্যাপটি ছিল। ওই অ্যাপের মাধ্যমে হরিয়ানার গুরুগ্রামে বসবাসকারী এক ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ হয় শ্রদ্ধার। তাঁর সঙ্গেই দেখা করতে যাচ্ছিল শ্রদ্ধা।
১৮ মে ২০২২
গুরুগ্রাম যাওয়ার পর সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরেননি শ্রদ্ধা। এমনকি মোবাইল ফোনেও উত্তর দিচ্ছিলেন না। সেজন্য সারা রাত আফতাবের মন খারাপ ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ ১৮ মে, ২০২২ এ সকাল ১১টার দিকে শ্রদ্ধা ছতরপুরের ফ্ল্যাটে ফিরে আসে। পুলিশ ১৮ মে সিসিটিভি ফুটেজও পেয়েছে, যাতে শ্রদ্ধাকে ফ্ল্যাটে ঢুকতে দেখা যায়। শ্রদ্ধাকে দেখে আফতাব রেগে গিয়ে প্রশ্ন করল সারারাত কোথায় ছিলে? আর রাতে ফিরে এলে না কেন?
গলা টিপে খুন
শ্রদ্ধা ওয়াকার পাল্টা জবাব দিলেন, মানে? আমার যা ইচ্ছা তাই করব। শ্রদ্ধার উত্তর শুনে আফতাব ক্ষিপ্ত হয়ে শ্রদ্ধাকে মারধর করে। তবে কিছুক্ষণ পর দুজনেই স্বাভাবিক হয়ে যায়। এর পর দুজনেই অনলাইনে খাবারের অর্ডার দেন। সন্ধ্যা হয়ে গেছে, কিন্তু রাতের খাবার খাওয়ার আগেই আফতাব আবারও রাতে না ফেরার জন্য শ্রদ্ধার ওপর রেগে যায়। শুরু হয় মারধর। এরপর আফতাব শ্রদ্ধার বুকের ওপর বসে তাঁর গলা টিপে ধরে।
লাশ লুকাতে চেয়েছিল হিমাচলে
সূত্রে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, ১৮ মে শ্রদ্ধাকে হত্যার পর আফতাব ভাবতে থাকে শ্রদ্ধার মৃতদেহ কিভাবে এবং কোথায় ফেলা যায়? এরপর লাশটি একটি ব্যাগে রেখে হিমাচল প্রদেশে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করে সে। ভেবেছিল শ্রদ্ধার মৃতদেহ একটি ব্যাগে ভরে হিমাচল নিয়ে যাবে সে।
নখ পুড়িয়ে দেয় আফতাব
শরীরের টুকরো দেখে কারও যাতে সন্দেহ না হয়, সেজন্য শ্রদ্ধার সব আঙুলের নখ পুড়িয়ে দেয় আফতাব। আলাদা করে সব নখ উপড়ে ফেলে তাতে আগুন ধরায় আফতাব।
খুন করেও শ্রদ্ধাকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিল আফতাব
খুন করার পরও শ্রদ্ধার মোবাইল ব্যবহার করত আফতাব। ফোন এলে রিসিভও করত। যাতে কেউ সন্দেহ না করে।