ফের খুন তৃণমূল নেতা। ভাঙড়ের পর এবার বীরভূমের সাঁইথিয়ায় গুলি করে খুন করা হল তৃণমূলের শ্রীনিধিপুর অঞ্চল সভাপতি পীযূষ ঘোষকে।
শনিবার ভোরে ৪টে নাগাদ তাঁর গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। জানা গিয়েছে, পীযূষ বাড়ি থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরেই ছিলেন। রাস্তার পাশে পড়ে ছিল তাঁর দেহ। পাশে ছিল তাঁর বাইক। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, মাথার পিছন থেকে গুলি করা হয়। গুলি মাথা ভেদ করে কপাল দিয়ে বেরিয়ে যায়। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দুই মহিলা-সহ মোট তিন জনকে আটক করেছে পুলিশ। চলছে জিজ্ঞাসাবাদ।
পুলিশের অনুমান, খুব কাছ থেকে গুলি চালানো হয়েছে। ফলে খুনিরা পরিচিত বলেই সন্দেহ করা হচ্ছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, সম্ভবত বাইক থামিয়ে পীযূষ ঘোষ কারও সঙ্গে কথা বলছিলেন। সেই সময়েই পেছন থেকে মাথায় গুলি করা হয়।
ঘটনার পরই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পরিবারের দাবি, বেশ কিছুদিন ধরেই উদ্বেগের মধ্যে ছিলেন পীযূষ। মূলত বালি সংক্রান্ত কিছু বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন।
পরিবার সূত্রে খবর, রাত প্রায় ১২টার সময় পীযূষের কাছে একটি ফোন কল আসে। তারপরই তিনি বাড়ি থেকে বাইক নিয়ে বেরিয়ে যান। ভোররাতে খবর আসে, পীযূষবাবুকে গুলি করা হয়েছে।
পরিবারের ক্ষোভ, প্রথমে দেহ তুলতে কাউকে পাওয়া যায়নি। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে। ময়নাতদন্ত চলছে।
পরিবারের আরও দাবি, এর আগে ভোটের সময় তাঁদের হুমকি দেওয়া হয়েছিল। বাড়িতে চিরকুট পাঠিয়ে পীযূষ ঘোষ ও তাঁর ছেলেকে খুনের হুমকি দেওয়া হয়। পরিবারের আশঙ্কা, সভাপতির পদ থেকে সরানোর জন্যই এই খুন।
পীযূষ ঘোষের স্ত্রী বলেন, 'আমি বহুবার বলেছিলাম, রাজনীতি ছেড়ে দাও। এখন দুই ছেলেকে নিয়ে খুব চিন্তায় আছি। ছেলেরা তাদের বাবাকে হারাল। ছেলেদের যেন চাকরির ব্যবস্থা করা হয়।'
তিনি আরও বলেন, 'আমার ছেলেরা বাবা হারাল। আমি চাই, যারা ওঁকে খুন করেছে, তাদের ফাঁসি হোক।'
খুনের পিছনে ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব, ব্যবসায়িক সমস্যা, নাকি রাজনৈতিক কারণ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার ভাঙড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় তৃণমূল নেতা রাজ্জাক খানের। এর তিন দিনের মধ্যে আরও এক তৃণমূল নেতার মৃত্যুতে রাজ্য রাজনীতিতে উত্তেজনার পারদ চড়ছে।
সাঁইথিয়ার খুনের ঘটনায় কারা জড়িত, খুনের কারণ কী, সমস্ত প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা। দোষীদের দ্রুত শাস্তির দাবি করছেন এলাকাবাসীরা।