নারকেলডাঙ্গার বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারকে খুনের ঘটনায় আরও ২জনকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। এ নিয়ে গ্রেফতারির সংখ্যা বেড়ে দাঁডা়ল ৭-এ। অন্যদিকে ধৃত দুই জন তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পালের আত্মীয় বলেন দাবি মৃতের দাদার। ধৃতদের নাম সঞ্জয় দে ওরফে শুভ এবং অভিজিত দে ওরফে লাল্টু। দুজনেই সম্পর্কে দুই ভাই এবং নারকেলডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা। সূত্রের দাবি, ধৃত দুজন অভিযুক্ত যুবক এলাকায় সক্রিয় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত। শুক্রবার অভিযান চালিয়ে হুগলির চন্দননগরে এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করে লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ। ধৃত দুজনেই স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পালের আত্মীয় বলে দাবি মৃত বিজেপি কর্মীর দাদা বিশ্বজিত সরকারের।
২রা মে, বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের দিন নারকেলডাঙ্গা এলাকার সক্রিয় বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারকে পিটিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে শাসকদল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধেও। ফলে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যায় মৃত বিজেপি কর্মীর পরিবার। এরপরেই টনক নড়ে পুলিশের। একে একে পাঁচজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। শুক্রবার এই মামলায় আরো অন্যতম অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়। অভিজিৎ সরকার হত্যা মামলায় এখনো পর্যন্ত মোট সাতজনকে গ্রেফতার করতে পেরেছে গোয়েন্দা বিভাগ। পুলিশ জানিয়েছে, এফআইআরে নাম থাকা মোট আট অভিযুক্তের মধ্যে ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, আরও একজনের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। মৃতের পরিবারের দাবি, গ্রেফতার হওয়া সঞ্জয় ওরফে শুভ এবং অভিজিৎ ওরফে লাল্টুই সেদিন অভিজিৎ সরকারের মুখ থেতলে দেয় এবং তারপর নৃশংস ভাবে পিটিয়ে মারে। পাশাপাশি এরা দুজন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পালের আত্মীয় বলে দাবি মৃতের দাদা বিশ্বজিত সরকারের। এদিন তিনি বলেন, "আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পাল এবং তার আত্মীয় স্বপন সমাদ্দার সহ অনেকে এই ঘটনায় জড়িত। আজ বিধায়কের আত্মীয় গ্রেফতার হওয়ায় আমাদের দাবি সত্যি প্রমাণিত হলো"।
পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার পর থেকেই সম্পর্কে আপন দুই ভাই চন্দননগরে এক আত্মীয় বাড়িতে দেখা গিয়েছিল। তাদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হতেই অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২, ৩২৩, ৪২৭, ৩৪১, ৫০৬, ৩৪ নম্বর ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। যদিও পুলিশের তদন্তে মৃতের পরিবার মৃত অভিজিৎ সরকারের দাদা বিশ্বজিত সরকারের দাবি, পুলিশের সন্তুষ্ট নয় বলেই মহামান্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি সিবিআই তদন্তের দাবিতে। কারণ নারকেলডাঙ্গা থানা পুলিশ দাঁড়িয়ে থাকে ঘটনা ঘটতে দিয়েছে। কলকাতা পুলিশের হাতে তদন্তভার থাকলে সব অভিযুক্তরা গ্রেফতার হবে না।