জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা (LoC) ঘিরে আবারও উত্তেজনার পারদ চড়ছে। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর পরই পাকিস্তানের তরফে একের পর এক মর্টার ও ভারী কামানের গোলাবর্ষণ চলছে। শুক্রবার পর্যন্ত এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন তিনজন, আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (BSF) একটি বড় অনুপ্রবেশ প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে ৭ জন সন্ত্রাসীকে গুলি করে হত্যা করেছে।
সেনা সূত্রে জানা গেছে, পাকিস্তান ৮ ও ৯ মে রাতে প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ ড্রোন ব্যবহার করে ৩৬টি স্থানে ভারতীয় সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালায়। লেহ থেকে স্যার ক্রিক পর্যন্ত বিস্তৃত এই হামলায় জম্মু শহরও ছিল লক্ষ্যবস্তু। ভারতীয় বাহিনী তৎপরতার সঙ্গে বহু ড্রোন ভূপাতিত করেছে এবং সীমান্তে কড়া নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে।
গোলাগুলিতে প্রাণহানি ও আহত
পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে মহম্মদ আবরার নামে এক বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন। তার স্ত্রী-সহ অন্তত তিনজন গুরুতর আহত। পুঞ্চ সেক্টরে সীমান্ত পেরিয়ে গুলিবর্ষণে শহীদ হয়েছেন অন্ধ্রপ্রদেশের সিপাহী এম. মুরলী নায়ক। বারামুল্লার উরি সেক্টরে রাতে চলা ভারী গোলাবর্ষণে একজন মহিলা নিহত হয়েছেন এবং একজন সেনা সহ আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে জম্মুতে পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ। তিনি পাকিস্তানকে সতর্ক করে বলেন, “সীমান্তের ওপার থেকে ক্রমবর্ধমান আগ্রাসন শেষ পর্যন্ত ওদেরই ক্ষতি করবে।” তিনি বৃহস্পতিবারের বিমান হামলাকে ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর "সবচেয়ে গুরুতর আক্রমণ" বলে আখ্যা দেন।
অন্যদিকে, লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা জম্মুর উরি সেক্টর পরিদর্শনে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও সেনাদের সঙ্গে কথা বলেন।
সীমান্তে নতুন আশঙ্কা
ভারতীয় সেনা সূত্রে জানা গেছে, পাকিস্তানের উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয় বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পরীক্ষা করা এবং গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয়, এই ড্রোন ও কামান হামলার সময় পাকিস্তান তার বেসামরিক আকাশসীমা বন্ধ করেনি, ফলে আন্তর্জাতিক ও যাত্রীবাহী বিমানের জন্য বিপদ তৈরি হয়েছে।
শান্তির আহ্বান
হুরিয়ত কনফারেন্সের চেয়ারম্যান মিরওয়াইজ উমর ফারুক এক বিবৃতিতে বলেন, “ভারত ও পাকিস্তান উভয়ের উচিত অবিলম্বে উত্তেজনা হ্রাস করে আলোচনার পথে ফেরা।”