সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও ভারতে আইটি সেক্টরে চাকরির ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতা এবং বেকারত্বের কঠিন বাস্তবতাকে তুলে ধরেছে। পুনের মাগারপাট্টা এলাকায় একটি আইটি সংস্থার ওয়াক-ইন ইন্টারভিউয়ের জন্য প্রায় ৩,০০০ ইঞ্জিনিয়ারকে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। খোলা আকাশের নিচে, রোদে দাঁড়িয়ে চাকরি পাওয়ার জন্য অপেক্ষারত এই দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্ক ও চিন্তার সৃষ্টি করেছে।
আইটি সেক্টরে তীব্র প্রতিযোগিতা
পুনের মাগারপাট্টা এলাকা বহু আইটি সংস্থার প্রধান ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। এখানে চাকরির প্রতিযোগিতা দীর্ঘদিন ধরেই তীব্র। তবে এবারের ঘটনা আরও বড় চিত্র ফুটিয়ে তুলেছে। ভিডিওতে দেখা যায়, অসংখ্য ইঞ্জিনিয়ার চাকরি পাওয়ার আশায় অপেক্ষা করছেন। একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, "এত বিশাল লাইন দেখে আমি হতবাক। চাকরির প্রতিযোগিতা কতটা বেড়েছে, এই দৃশ্য তা স্পষ্ট করে দেয়।"
কানাডার ভিডিওর সঙ্গে তুলনা
এই ঘটনার ঠিক আগে কানাডার ব্রাম্পটন শহরের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। সেখানে দেখা গিয়েছিল, ভারতীয় ছাত্রদের একটি রেস্তোরাঁয় ওয়েটার ও স্টাফ হিসেবে চাকরির জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে। ভিডিওটি দেখিয়ে দাবি করা হয়েছিল, কানাডার মতো উন্নত দেশেও চাকরির অভাব রয়েছে এবং ভারত থেকে যাওয়া ছাত্রদের গোলাপী স্বপ্ন সত্যি হচ্ছে না।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিক্রিয়া
ভারতের ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। কেউ বলছেন, আইটি সেক্টরে চাকরির সুযোগ কমে যাচ্ছে, আবার কেউ মনে করেন দক্ষতার অভাব পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলছে। অনেকেই এই লম্বা লাইনের ঘটনাকে 'অমানবিক' এবং 'হয়রানি' বলে সমালোচনা করেছেন।
একজন ব্যবহারকারী টুইট করেছেন, "এই ধরনের লাইন অপ্রয়োজনীয়। চাকরি পাওয়ার প্রক্রিয়া আরও আধুনিক ও কার্যকর হতে হবে। রিজিউমের ভিত্তিতে চাকরি দেওয়ার প্রক্রিয়া চালু করা উচিত।"
ভারতে বেকারত্বের চ্যালেঞ্জ
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতে আইটি সেক্টরে সুযোগ থাকলেও জনসংখ্যার তুলনায় তা যথেষ্ট নয়। এছাড়া দ্রুত পরিবর্তিত প্রযুক্তি ও শিল্পের চাহিদার সঙ্গে অনেক ইঞ্জিনিয়ারের দক্ষতা খাপ খায় না।
প্রয়োজন সমাধানের পথ
এই ঘটনা আইটি সেক্টরে প্রতিযোগিতা এবং বেকারত্বের সংকটকে স্পষ্ট করে তুলেছে। পরিস্থিতি বদলাতে প্রয়োজন দক্ষতার উপর জোর দেওয়া এবং চাকরি দেওয়ার প্রক্রিয়াকে আরও আধুনিক করা। পাশাপাশি, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাকে উন্নত করে নতুন প্রজন্মের জন্য উপযুক্ত সুযোগ তৈরির দিকেও মনোযোগ দেওয়া জরুরি।