ঝাঁ চকচকে হাসপাতাল। করিডোর দিয়ে হেঁটে আসছে ৫ যুবক। প্রত্যেকের হাতেই পিস্তল। তারা প্রবেশ করছে রুম নম্বর ২০৯-এ। তারপর সেই ঘরে থাকা একজনকে গুলি করে খুনের পর পালাচ্ছে করিডোর দিয়ে। মাত্র ২৫ সেকেন্ডের এই ভিডিও ঘিরে তোলপাড়। ঘটনা বিহারের পটনার পারস হাসপাতালের।
গুলি করে যাকে খুন করা হয় তার নাম চন্দন মিশ্র। বক্সারের বাসিন্দা চন্দনের বিরুদ্ধে কেশরি নামে একজনকে খুন করে জেল খাটছিল। তবে চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে আইসিইউ-তে ভর্তি করা হয়েছিল। তখনই তাকে খুন করে গ্যাংস্টাররা।
এদিকে ঘটনার পর সেই ২০৯ নম্বর রুমে যায় পুলিশ। সেখান থেকে ১২ টি গুলি উদ্ধার হয়। হাসপাতালের রক্ষী-সহ ১২ জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। তদন্তকারী পুলিশ অফিসার কার্তিক শর্মা জানিয়েছেন, ৫ জন দুষ্কৃতী এই খুনের সঙ্গে যুক্ত। তাদের ছবি সামনে এসেছে। শীঘ্রই গ্রেফতার করা হবে। হাসপাতালের ভিতর তারা কীভাবে প্রবেশ করল, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত চন্দন মিশ্রর বিরুদ্ধে খুন, সংঘর্ষ-সহ একডজন মামলা রয়েছে। বক্সারে চন্দন ও শেরু গ্যাং এক সময় সঙ্গে কাজ করত। তবে ঝামেলার কারণে পরে তারা দল ভাগ করে নেয়। তখন থেকে দুই পক্ষের মধ্যে শত্রুতা বাড়ে। প্রাথমিকভাবে অনুমান, প্রতিদ্বন্দ্বী গ্যাং তাকে খুন করেছে।
ইনসপেক্টর জেনারেল জীতেন্দ্র রানা বলেন, 'বক্সার জেলার কুখ্যাত দুষ্কৃতী এই চন্দন। তার সঙ্গে অনেকের শত্রুতা ছিল। প্যারোলে মুক্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল চিকিৎসার জন্য। সেই সুযোগ কাজে লাগায় দুষ্কৃতীরা।'
এই ঘটনায় হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। জীতেন্দ্র রানা জানান, হাসপাতালে যে কেউ যখন তখন ঢুকতে পারে না। সেজন্য কর্তৃপক্ষের অনুমতি প্রয়োজন। এমন একটা হাসপাতালে পিস্তল নিয়ে দুষ্কৃতীরা কীভাবে প্রবেশ করল, সেটাও তদন্তসাপেক্ষে বিষয়। হাসপাতালের কোও কর্মীকে সন্দেহের ঊর্ধ্বে রাখা যাচ্ছে না।
তদন্তে কিছুটা অগ্রগতিও হয়েছে। পুলিশ জানতে পেরেছে দুষ্কৃতীরা মোটর সাইকেলে এসে গুলি করে পালায়। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, 'হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীরা কেন দুষ্কৃতীদের পিস্তল-সহ ঢুকতে দিল, সেটা লাখ টাকার প্রশ্ন। হাসপাতালের কেউ জড়িত থাকতে পারে। সেটা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পুলিশ নিজেদের একশো শতাংশ দিয়ে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।'