ওয়াকফ সংশোধনী বিলকে সমর্থন জানানো ঘিরে এবার অসন্তোষ দানা বাঁধল নীতীশ কুমারের দলে। জেডিইউ-র ৫ শীর্ষ নেতা ইস্তফা দিয়েছেন। ওয়াকফ বিল সমর্থন করেছে দল, আর সেই কারণেই ইস্তফা বলে মনে করা হচ্ছে। চলতি সপ্তাহেই লোকসভা ও রাজ্যসভায় পাশ হয়েছে ওয়াকফ সংশোধনী বিল। এনডিএ শরিক হিসাবে এই বিলকে সমর্থন জানিয়েছে নীতীশের দল।
সামনেই বিহারে বিধানসভা নির্বাচন। সে রাজ্যে মুসলিম ভোটের কথা মাথায় রেখে প্রথমে ওয়াকফ বিল নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছিল না জেডিইউ। শরিক দল হিসাবে তারা বিলকে সমর্থন জানাবে কি না, সে নিয়ে সংশয় ছিল এনডিএ শিবিরে। শেষমেশ, এনডিএ শিবিরকে স্বস্তি দিয়ে বিলকে সমর্থন জানিয়েছে নীতীশের দল। এর পর পরই ৫ নেতার ইস্তফা এই পর্বে নয়া মাত্রা যোগ করেছে।
ইস্তফা দিয়েছেন দলের যুব শাখার ভাইস প্রেসিডেন্ট তাবরেজ হাসান। এর আগে, ইস্তফা দিয়েছেন দলের সংখ্যালঘু সেলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ শাহনওয়াজ মালিক, রাজ্য সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ তবরেজ সিদ্দিকি, মহম্মদ দিলশান রেইন ও মহম্মদ কাসিম আনসারি।
প্রায় ১২ ঘণ্টা বিতর্কের পর বুধবার লোকসভায় পাশ হল ওয়াকফ সংশোধনী বিল। বুধবার গভীর রাতে ভোটাভুটিতে পাশ হল বিল। বিলের পক্ষে ভোট দিলেন ২৮৮ জন সাংসদ। বিপক্ষে ভোট দিলেন ২৩২ জন। বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় এই বিল পাশ করা হয়। বুধবার লোকসভায় ওয়াকফ সংশোধনী বিল পেশ করেন কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। বিল পেশ হতেই একযোগে বিরোধিতায় সরব হয় বিরোধী শিবির। ওয়াকফ বিলের বিরোধিতা জানিয়ে প্রথম থেকেই সরব তৃণমূল-সহ বিভিন্ন বিরোধী দল। বিরোধীদের পাল্টা সরব হয় সরকার পক্ষ। শেষমেশ গভীর রাতে ভোটাভুটিতে পাশ হল এই বিল। বুধবার লোকসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন,'ওয়াকফ আইন এবং ওয়াকফ বোর্ড ১৯৯৫ সালে কার্যকর হয়েছিল। অমুসলিমদের সম্পর্কে যে দাবি করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি দেশের মুসলিমদের বলতে চাই যে একজনও অমুসলিম ওয়াকফে থাকবে না। এই আইনে এমন কোনও বিধান নেই। তবে ওয়াকফ বোর্ড এবং ওয়াকফ কাউন্সিল এখন ওয়াকফ সম্পত্তি বিক্রিকারীদের ধরবে। যাঁরা ওয়াকফের নামে ১০০ বছরের জন্য সম্পত্তি লিজ দেবেন তাঁদেরও ধরা হবে। ওয়াকফের আয় কমছে। ওই আয় থেকে সংখ্যালঘুদের উন্নয়ন করতে হবে। তাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সেই টাকা চুরি করা হচ্ছে। ওয়াকফ বোর্ড এবং কাউন্সিল সেটা ধরবে'। শাহ আরও বলেন,'কিছু লোক গুজব ছড়াচ্ছে যে এই আইন মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অধিকার এবং সম্পত্তিতে হস্তক্ষেপ করবে। এটি সম্পূর্ণ ভুল এবং সংখ্যালঘুদের ভয় দেখানোর একটি ষড়যন্ত্র, যাতে তাঁদের ভোট ব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করা যায়'।