কেরলের রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল কান্নুর জেলায় ২০০৫ সালে সিপিআইএম কর্মী রিজিথ শঙ্করন হত্যার ঘটনায় মঙ্গলবার থ্যালাসেরি অতিরিক্ত জেলা আদালত নয়জন আরএসএস কর্মীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছে। ২৫ বছর বয়সী রিজিথ, কান্নাপুরম চুন্দার বাসিন্দা এবং সিপিআইএম-এর সক্রিয় কর্মী ছিলেন।
ঘটনার বিবরণ:
২০০৫ সালের ৩ অক্টোবর চুন্দা এলাকার একটি মন্দিরের কাছে রিজিথ এবং তার বন্ধুরা অতর্কিত হামলার শিকার হন। অভিযোগ, আরএসএস কর্মীদের একটি দল অস্ত্রসহ তাদের ওপর আক্রমণ চালায়। ঘটনাস্থলেই রিজিথের মৃত্যু হয়, এবং তার তিন বন্ধু গুরুতর আহত হন।
এই হত্যাকাণ্ড ঘটে এমন সময়, যখন আরএসএস এবং সিপিআইএম-এর মধ্যে তীব্র রাজনৈতিক সংঘাত চলছিল। রিজিথ তখন বাড়ি ফেরার পথে ছিলেন। আক্রমণকারীরা পরিকল্পিতভাবে তাকে টার্গেট করে এবং একটি কূপের কাছে এই নৃশংস ঘটনা ঘটায়।
আদালতের রায়:
৪ জানুয়ারি থ্যালাসেরির অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত মামলার নয় অভিযুক্তকে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে। ধারা ৩০২ (খুন), ৩০৭ (হত্যার চেষ্টা), ১৪৩ (বেআইনি সমাবেশ), ১৪৭ (দাঙ্গা), ৩৪১ (অন্যায়ভাবে আটকে রাখা), এবং ৩২৪ (স্বেচ্ছায় আঘাত করা)-এর মতো ধারাগুলি তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণিত হয়েছে।
অভিযুক্ত ১০ জনের মধ্যে একজন বিচার চলাকালীন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। দোষী সাব্যস্ত নয়জন হলেন সুধাকরণ (৫৭), জয়েশ (৪১), রঞ্জিত (৪৪), অজেন্দ্রন (৫১), অনিলকুমার (৫২), রাজেশ (৪৬), শ্রীকান্ত (৪৭), তার ভাই শ্রীজিথ (৪৩), এবং ভাস্করন (৪৩)।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও আদালতের নির্দেশ:
আদালত মামলাটির গুরুত্ব বিবেচনা করে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে রায় ঘোষণা করে। অভিযুক্তদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ছাড়াও, তাদের বিরুদ্ধে অন্যান্য ধারার অধীনে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া:
এই ঘটনাটি আবারও কান্নুরের রাজনৈতিক অস্থিরতাকে সামনে এনেছে, যেখানে দীর্ঘদিন ধরে আরএসএস ও সিপিআই(এম)-এর মধ্যে সংঘর্ষ চলমান। এই রায়কে সিপিআইএম ন্যায়বিচার হিসেবে দেখছে, তবে আরএসএস-এর পক্ষ থেকে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি।