নারী নির্যাতন থেকে রেল দুর্ঘটনা। নির্মলা সীতারমনের বাজেটের জবাবি ভাষণে ইস্যু ধরে ধরে বিজেপিকে বিঁধালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাঁর ভাষণের মাঝেই দুই দলের সাংসদদের বিতণ্ডায় উত্তাল হল লোকসভা। বিজেপি সাংসদদের হট্টগোলের জবাব দিলেন তৃণমূল সাংসদরা। বেশি শোনা গিয়েছে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠস্বর। একাধিকবার বিরোধীদের 'অ্যাই বস' বলতে শোনা গিয়েছে। সোচ্চার হয়েছেন মহুয়া মৈত্র ও সায়নী ঘোষের মতো তৃণমূল সাংসদরাও। অধিবেশন সুষ্ঠুভাবে চালাতে বারেবারে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে স্পিকার ওম বিড়লাকে।
মঙ্গলবার নির্মলা সীতারমনের বাজেট পেশের পর অন্ধ্রপ্রদেশ ও বিহারের বাজেট বলে কটাক্ষ করেছিলেন অভিষেক। এ দিনও তাঁর মুখে শোনা গিয়েছে সেই কথা। শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য টেনে কেন্দ্রকে নিশানা করেছেন তৃণমূল সাংসদ। তাঁর কথায়,'প্রান্তিক মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসযোগ্যতা করেছে বিজেপি সরকার। জো হামারে সাথ হাম উনকে সাথ বলে তো স্বীকার করে নিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। যা প্রমাণ করে দিয়েছেন ব্যর্থ অর্থমন্ত্রী'। সেই সঙ্গে মহিলা ক্ষমতায়নে রাজ্য সরকারের ভূমিকার কথাও তুলে ধরেন অভিষেক। সেই সূত্রেই এসেছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের প্রসঙ্গ। অভিষেকের দাবি, 'লক্ষ্মীর ভাণ্ডারকে দেশের মডেল করা হোক'।
এ দিন ইংরেজি শব্দ 'Budget'-র প্রতিটি অক্ষরকে অ্যাক্রোনিমে ভেঙে আক্রমণ শানিয়েছেন অভিষেক। তিনি বলেন,'বাজেটের প্রথম শব্দ 'বি' মানে 'বিট্রেয়াল' (বিশ্বাসঘাতকতা)। ২০১৪ সালে অচ্ছে দিনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি। সাধারণ মানুষ, শ্রমিক, কৃষক এবং মহিলাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে বিজেপি সরকার। মূল্যবৃদ্ধিতে জেরবার সাধারণ মানুষ। ১১০০ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে সিলিন্ডারের দাম। মানুষের সঞ্চয় কমেছে। বেড়েছে ধার। 'ইউ' মানে 'আনএমপ্লয়মেনট' মোদীজির তিসরিবার, যুবক আবি ভি বেরোজগার'।
বাংলায় বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে বলেও অভিযোগ করে বিরোধীরা। এ দিন অভিষেক বলেন,'গত এক দশক ধরে বাংলা বিরোধী অবস্থান নিয়েছে কেন্দ্র। কণ্ঠস্বর রোধ করেছে বাংলার। মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি। বাংলার সংস্কৃতিকে অপমান করেছে ওরা। গ্রামের গরিবদের বঞ্চিত করেছে কেন্দ্র। নির্মলা সীতারমন শ্বেতপত্র প্রকাশ করুন, কত টাকা বাংলাকে দিয়েছেন'।
ভাষণের শেষে মোদী সরকারের স্থায়ীত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন অভিষেক। তিনি বলেন,'সময় বদলে গিয়েছে। দেশের ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগ করেনি সরকার। প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ রক্ষা করতে বিনিয়োগ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর হাতে বেশি সময় নেই'। শাহরুখ খানের জনপ্রিয় সংলাপ বলে শেষ করেন অভিষেক- 'থোড়া সবর রাখিয়ে, কুর্সি কা পেটি বান্ধ লিজিয়ে মৌসম বিগড় নে বালা হ্যায়'।