আজ চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের নবমী, রাম নবমী। এই দিনে ভগবান শ্রী রামের জন্মোৎসব উপলক্ষে অযোধ্যা রূপ নিয়েছে এক ঐশ্বরিক তীর্থভূমিতে। এবারের রাম নবমী উদযাপন বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ কারণ এটি অযোধ্যার নবনির্মিত রাম মন্দিরে দ্বিতীয় রাম জন্মোৎসব। শহরের প্রতিটি মন্দির সুসজ্জিত, ভক্তদের ভিড়ে মুখরিত গোটা রামনগরী।
সূর্য তিলক: ঐতিহাসিক বিজ্ঞানসম্মত আয়োজন
আজকের প্রধান আকর্ষণ ছিল ‘সূর্য তিলক’। দুপুর ১২টায় রাম লালার জন্মমুহূর্তে সূর্যের রশ্মি সরাসরি রামের কপালে এসে পড়েছে। প্রায় ৪ মিনিট ধরে এই রশ্মি কপালে তিলকের মতো অবস্থান করে, যা বৈজ্ঞানিকভাবে পরিকল্পিত। এই সূর্য তিলক অনুষ্ঠানের প্রযুক্তিগত দিকটি উন্নয়ন করেছে ISRO-র বিজ্ঞানীরা। গোটা অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচারিত হয়েছে টিভি ও এলইডি স্ক্রিনে, যাতে বিশ্বজুড়ে থাকা রামভক্তরা এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে পারেন।
মহাসজ্জা ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান
সকাল ৯:৩০ টায় রাম লালার মূর্তিতে জলাভিষেকের মাধ্যমে শুরু হয় মূল আচার। এরপর এক ঘণ্টা ধরে বিশেষ সজ্জা এবং পূজার পর প্রসাদ বিতরণ করা হয়। রাম জন্মের মুহূর্তে অনুষ্ঠিত হয় মহাআরতি ও সূর্য তিলক। ভগবানকে উৎসর্গ করা হয় ৫৬ প্রকার নৈবেদ্য। রাম জন্মভূমি মন্দির চত্বরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে ভক্তিময় পরিবেশ।
রাম মন্দির প্রাঙ্গণে আয়োজিত হয়েছে বাল্মীকি রামায়ণ পাঠ, শ্রী রাম চরিত মানস গানের অনুষ্ঠান এবং বিভিন্ন ধর্মীয় আলোচনা। মন্দিরে অঙ্গদ টিলার উপর বিশেষ স্তোত্র ও গীতিও পরিবেশন করা হয়েছে।
জপ, হোম ও পূর্ণ ভক্তিভাব
এই উৎসবকে আরও পবিত্র ও ধর্মীয়ভাবে মহিমান্বিত করতে ১০ জন বিশিষ্ট পণ্ডিত মিলিতভাবে এক লক্ষ ‘শ্রী রাম’ মন্ত্র জপ করছেন। প্রতিদিন তিন ঘণ্টা ধরে চলছে হোম বা হবন, যা সমগ্র পরিবেশকে করে তুলেছে আরও পবিত্র ও ভাবগম্ভীর।
ভক্তদের জন্য সুচিন্তিত ব্যবস্থা
গ্রীষ্মকালীন তাপপ্রবাহ মাথায় রেখে ভক্তদের জন্য বিশুদ্ধ পানীয় জল, কুলার, ছাউনি ও মাদুরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। হনুমানগড়ির চারপাশে তৈরি হয়েছে অস্থায়ী তাঁবু। শহরের প্রতিটি কোণে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ওপর গুরুত্ব দিয়ে সজ্জিত হয়েছে গোটা অযোধ্যা।
ভিড় সামলাতে নিরাপত্তা এবং গেট পরিকল্পনা
রাম নবমীর দিন ভক্তসংখ্যা ২৫-৩০ লক্ষ ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকায়, নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ব্যবহার করা হচ্ছে ৩ নম্বর প্রস্থান গেট। সর্বত্র মোতায়েন আছে পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবক ও প্রশাসনিক বাহিনী।