বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ধরপাকড়ের নামে দিল্লিতে বাংলাভাষী পড়ুয়া এবং পরিযায়ী শ্রমিকদের বিপাকে ফেলা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে এমনটাই দাবি করলেন সর্বভারতীয় কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীররঞ্জন চৌধুরী। চিঠিতে তিনি লিখেছেন,'অতিসম্প্রতি অবৈধ বাংলাদেশি তাড়ানোর অভিযান শুরু করেছে দিল্লি পুরসভা। তার জেরে হয়রান হচ্ছেন বাংলাভাষী পড়ুয়া এবং তাদের পরিবার'।
অধীরের বক্তব্য,'দিল্লি এবং অন্যান্য রাজ্যে বাংলাভাষী পড়ুয়াদের টার্গেট করা হচ্ছে। নেওয়া হচ্ছে বাবা-মায়ের বিষয়ে খোঁজখবর। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করার জন্য দিল্লি পুরসভা অভিযান চালাচ্ছে। সমস্যায় পড়েছে গরিব বাঙালি ছাত্ররা এবং তাদের পরিবার'।
অতিসম্প্রতি ১৭৫ জন সন্দেহভাজন বাংলাদেশি নাগরিককে সনাক্ত করেছে দিল্লি পুলিশ। তদন্তে দেখা গিয়েছে, কোনও বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই দিল্লিতে বসবাস করছিল তারা। দিল্লিতে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। জাল নথিপত্র তৈরির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ৬ জনকে। অধীরের মতে, এই ধরনের প্রচার বাংলাভাষীদের মধ্যে ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করে তিনি বলেন,'বাংলার মানুষের বিরুদ্ধে যেন কোনও অন্যায় পদক্ষেপ না নেওয়া হয় তা নিশ্চিত করতে হবে'।
অধীর রঞ্জন চৌধুরী চিঠিতে লিখেছেন,'পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ, মালদা, নদিয়া এবং ২৪ পরগনা জেলা থেকে বিপুল সংখ্যক শ্রমিক যাচ্ছে দিল্লি এবং অন্যান্য রাজ্যে'। প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাঁর আবেদন, প্রকৃত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করা হোক। তবে পশ্চিমবঙ্গের কোনও নিরপরাধ ব্যক্তিকে যেন হয়রানি না করা হয়।
ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ব্রিটিশ জমানা থেকে বাঙালির উপস্থিতির কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন অধীর। লিখেছেন,'ব্রিটিশ জমানায় বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি দেশের বৃহত্তম প্রদেশ ছিল। সেই সময় থেকে বাংলাভাষী মানুষ দেশের বিভিন্ন স্থানে বসবাস শুরু করেন। ১৯১১ সালে যখন ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লিতে স্থানান্তরিত হয়, তখন বহু বাঙালি অফিসার দিল্লি চলে যান'।