শরিক দলের উপর নির্ভর করে এবার সরকার গড়তে হয়েছে মোদী বাহিনীকে। যা নিয়ে প্রায়শই বিরোধীদের কটাক্ষের মুখে পড়তে হচ্ছে বিজেপিকে। এই সরকার টিকবে কি না, সেই নিয়েও নানা তীর্যক মন্তব্য করেছেন বিরোধী দলের নেতারা। এবার এই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। তিনিও বললেন, 'তৃতীয় মোদী সরকারকে টিকে থাকার লড়াই করতে হবে। ছোটখাটো সমস্যা হলেও সরকার পড়ে যেতে পারে।'
এবার লোকসভা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। শরিক দলের সঙ্গে জোট বেঁধে শেষ পর্যন্ত এনডিএ সরকার গড়েছে। তৃতীয় বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। তবে ভোটের ফলে ভারতীয় রাজনীতিতে একটা বড় বদল হয়েছে বলে মনে করছেন রাহুল। সেই বদলের সূত্র ধরেই তৃতীয় মোদী সরকারের টিকে থাকার লড়াই নিয়ে মন্তব্য করেছেন রাহুল। ব্রিটেনে ফিনান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাহুল বলেছেন, 'সংখ্যাটা এমন যে, ওদের ভঙ্গুর অবস্থা। ছোটখাটো সমস্যাও সরকার ফেলে দিতে পারে।'
৫৪৩ আসনের লোকসভায় এবার বিজেপি পেয়েছে ২৪০টি আসন। অর্থাৎ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। ৯৯টি আসন পেয়েছে কংগ্রেস। বিজেপি বিরোধী জোটের ঝুলিতে রয়েছে ২৩৪টি আসন। এনডিএ পেয়েছে ২৯৩টি আসন। তাই শরিক দলকে এবার বাড়তি গুরুত্ব দিতে হয়েছে মোদী-শাহদের। এবার নির্বাচনের আগে আগে অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধন বিজেপির কাছে বড় হাতিয়ার ছিল মনে করেছিলেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। তবে সেই অযোধ্যায় ভাল ফল করতে পারেনি বিজেপি। এই প্রসঙ্গে রাহুল বলেছেন, 'গত ১০ বছরে অযোধ্যা নিয়ে কথা বলেছে। সেই অযোধ্যাতেই ধুয়ে মুছে গিয়েছে।'
অন্য দিকে, লোকসভা নির্বাচনে মোদী বাহিনীর '৪০০ পারের' স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে। শরিকদের উপর নির্ভর করে সরকার গড়তে হয়েছে বিজেপিকে। এই প্রেক্ষপটে ফল নিয়ে বিজেপিকে কার্যত চাঁচাছোলা ভাষায় নিশানা করেছে আরএসএস। সঙ্ঘের মুখপত্রে বলা হয়েছে যে, ভোটের ফল একটা 'রিয়েলিটি চেক'। বিজেপির নেতত্বের সমালোচনা করে বলা হয়েছে যে, ভোটের ফল অতিরিক্ত উৎসাহী বিজেপির নেতা-কর্মীদের কাছে রিয়েলিটি চেক। আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বিজেপির নেতা-কর্মীরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে এতটাই বিভোর ছিলেন যে, সাধারণ মানুষের কথা তাঁদের কাছে পৌঁছয়নি। আরএসএসের মুখপত্রে এ-ও বলা হয়েছে, ভোটের ফলে এটাও স্পষ্ট হয়েছে যে, যেসব দক্ষ কর্মীরা অক্লান্ত ভাবে কাজ করেছেন, তাঁদেরকেই উপেক্ষা করা হয়েছে।