ফের দেশে বাড়ছে করোনাভাইরাস। প্রতিবারই নয়া রূপ ধারণ করে সংক্রমণ ছড়ায় এই ভাইরাস। এবার সেই রূপের নাম NB.1.8.1 এবং LF.7। যা ওমিক্রনেরই সাব ভ্যারিয়েন্ট বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এই ভ্যারিয়েন্ট আক্রান্ত ৪-৫ জনের সন্ধান মিলেছে। আবার আগে থেকেই ভারতে রয়েছে ওমিক্রনেরই অন্য এক ভ্যারিয়েন্ট JN.1। মহারাষ্ট্র থেকে শুরু করে দিল্লি, কেরল থেকে কলকাতা, সর্বত্রই নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে করোনার বাড়বাড়ন্তে। এবারের করোনা কতটা মারাত্মক? এই নিয়ে এবার মুখ খুললেন AIIMS-এর প্রাক্তন ডিরেক্টর তথা বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা: রণদীপ গুলেরিয়া।
জনপ্রিয় এই কোভিড বিশেষজ্ঞের কথায়, 'করোনাভাইরাসের নয়া ভ্যারিয়েন্ট JN.1 বেশি সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। গত ২০২৩ সালের অগাস্ট মাসে প্রথম এই ভ্যারিয়েন্টের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছিল।' ডা: রণদীপ গুলেরিয়া জানিয়েছেন, বহু মিউটেশনের ফলে এই ভ্যারিয়েন্ট তৈরি হয়েছে। এর সংক্রমণ ক্ষমতা অনেকটাই বেশি।
কী কী উপসর্গ দেখা দিচ্ছে নয়া ভ্যারিয়েন্টে?
এই JN.1 ভ্যারিয়েন্টের প্রভাবে জ্বর, নাক বন্ধ, কাশি হচ্ছে। যাঁদের হার্টের সমস্যা রয়েছে কিংবা ডায়াবিটিসে ভুগছেন যাঁরা, তাঁদের বিশেষ ভাবে সাবধান হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ডা: রণদীপ গুলেরিয়া।
ফের ভ্যাকসিন নিতে হবে?
ডা: রণদীপ গুলেরিয়া বলেন, 'এখনও পর্যন্ত যা ডেটা হাতে এসেছে তাতে দেখা গিয়েছে, আগে নেওয়া ভ্যাকসিন এই ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে কার্যকর হচ্ছে। আমাদের মধ্যে কোভিডের মোকাবিলায় ইমিউনিটি তৈরি হয়েছে একথা যেমন ঠিক, তেমনই বারবার মিউটেট হওয়ায় ভাইরাস সংক্রমণ ছড়াতে সক্ষম হচ্ছে।'
AIIMS-এর প্রাক্তন ডিরেক্টর আরও বলেন, 'তবে আমাদের ভ্যারিয়েন্টটিকে পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। দেখতে হবে আদৌ এটি গুরুতর হয়ে উঠছে কি না। প্রবীণ এবং কোমর্বিড রোগীদের সাবধান হওয়া আবশ্যক। সাবধানের মার নেই! ফলে পুরনো কোভিড প্রোটোকল ফের চালু করা উচিত।'
কোভিড ভ্যাকসিনের কি বদলে এসেছে?
ইয়েলের রিপোর্ট অনুযায়ী, কোভিড ভ্যাকসিন প্রতি বছর আপডেট হচ্ছে। ঠিক যেমন ভাবে ফ্লু-এর ভ্যাকসিনও প্রতি বছর ভ্যারিয়েন্ট অনুযায়ী বদল হয়।
২০২০-২১: প্রথমবার এসেছিল mRNA ভ্যাকসিন (ফাইজার ও মর্ডানা)। যা মূল ভাইরাসকে টার্গেট করেছিল।
২০২২: মূল ভাইরাস+ওমিক্রন BA.4/BA.5 ভ্যারিয়েন্টকে টার্গেট করে বদল হয় ভ্যাকসিন।
২০২৩: এরপর ভ্যাকসিন এল XBB-র জন্য।
২০২৪-২৫: লেটেস্ট ভ্যাকসিন KP.2 ভ্যারিয়েন্টকে মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছে।
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা: স্কট রবার্টসের মতে, 'প্রতিটি নয়া ভ্যাকসিন ভ্যারিয়েন্টের মোকাবিলা করার জন্য ডিজাইন করা হয়। গুরুতর অসুস্থ হওয়া, হাসপাতালে ভর্তি এবং মৃত্যু রুখতেই ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়।'
পুরনো ভ্যাকসিন নয়া ভ্যারিয়েন্টে কার্যকর?
ডা: রণদীপ গুলেরিয়া জানান, পুরোপুরি সংক্রমণ রুখতে পারে না টিকা। তবে গুরুতর লক্ষণ এবং লং কোভিডের ঝুঁকি কমায় ভ্যাকসিন। টিকাকরণের পরও যদি কেউ সংক্রমিত হন, সেক্ষেত্র উপসর্গ কম হয়।