২০১৯ সালের বোয়িংয়ের নির্দেশিকা অনুযায়ী, আহমেদাবাদে দুর্ঘটনাগ্রস্ত ওই বিমান (বোয়িং ৭৮৭-৮) ড্রিমলাইনার বিমাবটির থ্রটেল কন্ট্রোল মডিউল (TCM) গত ৬ বছরে ২ বার বদলানো হয়েছিল। এই TCM-এ থাকে ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ। এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনার তদন্তে উঠে এসেছে, এই ড্রিমলাইনার এয়ারক্র্যাফ্টের ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ উড়ানের পর মাঝ আকাশে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে 'রান' থেকে 'কাট অফ' মোডে চলে গিয়েছিল। আর সে কারণেই ককপিটে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল।
এয়ারক্র্যাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (AIIB) শনিবার সকালে প্রকাশ করা রিপোর্টে জানিয়েছে, সিনিয়র পাইলট তাঁর জুনিয়রকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, 'তুমি ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ কেন অফ করেছ?' জবাবে জুনিয়র পাইলট বলেছিলেন, 'আমি তো সুইচ অফ করিনি।' জানা গিয়েছে, এই সুইচ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণেই উড়ানে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। টেক অফের পরই আহমেদাবাদের মেঘানিনগর এলাকায় বিজে মেডিক্যাল কলেজের বিল্ডিংয়ের উপর ভেঙে পড়ে ফ্লাইট। ঘটনায় ২৬০ জনের মৃত্যু হয়। বেঁচে যান কেবল ১ জন। মেডিক্যাল কলেজের ১৯ জন ছাত্রও এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান।
এয়ার ইন্ডিয়া ২০১৯ এবং ২০২৩-এ বদলেছিল TCM
AIIB-র প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে ২০১৯ এবং ২০২৩ সালে ২ বার TCM বদলানোর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে সেখানে বলা হয়েছে TCM বদলানোর সঙ্গে ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচের কোনও সম্পর্ক নেই। পিটিআই-এ প্রকাশিত সূত্র বলছে, বোয়িংয়ের ২০১৯ সালের নির্দেশ মতো ড্রিমলাইনার সমস্ত অপারেটরদের জন্য সংশোধিত মেন্টেন্যান্স প্ল্যান ডকুমেন্ট জারি করেছিল। সেই অনুযায়ী, ২৪ হাজার ঘণ্টা উড়ান সম্পন্ন হলে সকল অপারেটরকেই ফ্লাইটের TCM বদলাতে হয়।
আগেই ছিল আশঙ্কা
AIIB টিমের তদন্তকারীদের এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটির সমস্ত পরীক্ষি নিরীক্ষা আগেই করা হয়েছিল। উড়ানের যোগ্যতাও অর্জন করেছিল ফ্লাইটটি। এক্ষেত্রে ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, এই ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ নিয়ে আগেও প্রশ্ন উঠেছে। সেই প্রশ্ন উঠেছে আমেরিকাতেই। বোয়িং ৭৩৭ বিমানের ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ নিয়ে ২০১৮ সালে মার্কিন ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FAA) সতর্ক করেছিল। ৭ বছর আগে FFA জানায়, কিছু বোয়িং ৭৩৭ বিমানের ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচগুলোর 'লকিং ফিচার' নিষ্ক্রিয় অবস্থায় ইনস্টল করা হয়েছে। যা বিপজ্জনক হতে পারে। তবে FFA সে সময় স্রেফ আশঙ্কার কথা বলেছিল। ওই ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচগুলোকে 'অসুরিক্ষত' বলে দেগে দেওয়া হয়নি। ফলে কোনওরকম পদক্ষেপও করা হয়নি।