মঙ্গলবার থেকেই দিল্লি-এনসিআরে (Delhi-NCR) কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল শুরু হয়েছিল। আবহাওয়া এমন ছিল যে ধোঁয়াশার কারণে লোকজনের চোখ জ্বালা করতে শুরু করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন সজাগ হয়ে উঠেছে। বৃহস্পতিবার গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যান (GRAP) এর তৃতীয় ধাপ বাস্তবায়নের নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (Commission for Air Quality Management)। এগুলি ছাড়াও, আগামী কয়েক দিনের জন্য শিশুদের স্কুল বন্ধ করার এবং শুধুমাত্র অনলাইনে ক্লাস করানোর পরামর্শ দেয় তারা। তারপরই দিল্লি সরকার জানিয়ে দিয়েছে যে আগামী দু'দিন রাজ্যে নার্সারি থেকে ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত ক্লাস হবে না। রাজ্যের সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি স্কুলকে এই নির্দেশ মানতে হবে। দূষণের পরিপ্রেক্ষিতে কেজরিওয়াল সরকার এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এছাড়াও, দিল্লিতে দূষণ মোকাবেলায় বেশি করে সরকারি পরিবহন ব্যবস্থায় জোর দেওয়া হচ্ছে। দিল্লি মেট্রো (DMRC) ৩ নভেম্বর থেকে ২০টি অতিরিক্ত মেট্রো চালাবে। ২৫ অক্টোবর থেকে এমনিতেই দিল্লি মেট্রো ৪০টি অতিরিক্ত ট্রেন চালাচ্ছে। তাহলে সব মিলিয়ে মোট ৬০টি অতিরিক্ত মেট্রো চালানো হবে।
দিল্লি স্টেট ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের এইচওডি ক্লিনিক্যাল অনকোলজি প্রজ্ঞা শুক্লা বলেছেন, 'বায়ু দূষণের মাত্রা ক্রমবর্ধমান হওয়ার কারণে, মানুষ চোখে জ্বালা, জল পড়া, বমি বমি ভাব, মাথাব্যথা এবং ক্লান্তির মতো বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এর দীর্ঘমেয়াদী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকবে।'
দূষণের বিপজ্জনক স্তরের পরিপ্রেক্ষিতে গুরুগ্রামের ডিএমও আবর্জনা পোড়ানোর উপর ১৪৪ ধারা জারি করেছেন। জেলায় AQI হ্রাস এবং শহরে উচ্চ মাত্রার দূষণের প্রভাবের পরিপ্রেক্ষিতে ডিএম নিশান্ত কুমার যাদব ধারা ১৪৪ কার্যকর করার আদেশ জারি করেছেন। যাতে করে শিল্প, শহর ও গ্রামীণ এলাকায় খোলা জায়গায় পড়ে থাকা বর্জ্য পদার্থ পোড়ানো নিষিদ্ধ এখন থেকে। সমস্ত পুরসভা কর্তৃপক্ষ, দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড এবং পুলিশকে এটা দেখতে বলা হয়েছে যাতে বর্জ্য পোড়ানোর কোনও ঘটনা না ঘটে। প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে তারা।
দিল্লি-এনসিআরে দূষণের মাত্রা ক্রমাগত বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দিল্লি-এনসিআর-এ অপ্রয়োজনীয় নির্মাণ কাজ, পাথর ভাঙা এবং খনির কাজ বন্ধ করার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। এছাড়াও, BS3 পেট্রোল এবং BS4 ডিজেল গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গাড়ি থামানোর বিষয়ে আরও কঠোরতা দেখিয়ে দিল্লি সরকার ২০ হাজার টাকা জরিমানাও করেছে। যদি কেউ দিল্লিতে এই ধরনের গাড়ি চালায়, তাহলে তাকে ২০ হাজার টাকার চালান দেওয়া হবে।