
আল-ফালাহ ইউনিভার্সিটি। দিল্লির লালকেল্লার কাছে বিস্ফোরণের পর এই বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়েই সারা দেশে চর্চা। এমনকী তদন্তকারীদের নজরেও এই বিশ্ববিদ্যালয়। কারণ, দিল্লির বিস্ফোরণের সঙ্গে এই প্রতিষ্ঠানের কর্মরত ডাক্তারদের যোগ খুঁজে পাওয়া গিয়েছে।
আসলে মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ ধৌজ গ্রামে অবস্থিত এই বিশ্ববিদ্যালয়। আর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গেই দিল্লি বিস্ফোরণের একাধিক যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ। তাই তদন্তকারীরা বুঝতে চেষ্টা করছেন, কীভাবে ক্যাম্পাসে দেশ বিরোধী কাজ চলত, কীভাবে মৌলবাদী কার্যকলাপের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠল বিশ্ববিদ্যালয়।
কবে তৈরি হয়?
১৯৯৭ সালে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হিসেবে পথ চলা শুরু করে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তারপর ২০১৪ সালে এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা পায়। এরপর থেকে এখানে বিভিন্ন বিষয় পড়ানো হতো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে জানা গিয়েছে, হরিয়ানা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের মাধ্যমে এই ইউনিভার্সিটি তৈরি হয়। প্রথম দিকে এটি জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া এবং আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটির বিকল্প হিসাবে সামনে আসে। সংখ্যালঘু পড়ুয়ারা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে আকৃষ্ট হয়।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কিছু কলেজও রয়েছে। সেগুলি হল, আল ফালাহ স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি, ব্রাউন হিল কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি এবং দ্যা আল ফালাহ স্কুল অব এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং। শুধু তাই নয়, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রয়েছে আল-ফালাহ মেডিক্যাল কলেজ। এই মেডিক্যাল কলেজে ৬৫০ শয্যার হাসপাতালও চলে। এখানে বিনে পয়সায় রোগী দেখেন চিকিৎসকেরা।
কারা চালায়?
এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি চালায় আল-ফালাহ চ্যারিটেবল ট্রাস্ট। এর মাথায় রয়েছেন চেয়ারম্যান আহমেদ সিদ্দিকি। প্রতিষ্ঠানের ভাইস চেয়ারম্যান হলে মুফতি আবদুল্লা কাশিমি এবং ডিএমই হলেন মহম্মদ ওয়াজিদ। ডঃ ভূপিন্দ্রর কৌর আনন্দ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। রেজিস্টার পদে রয়েছেন প্রফেসর ডাঃ মহম্মদ পারভেজ।
কেন এত হইচই?
দিল্লির লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের কাছে একটি ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়। সেই ঘটনার জন্য একাধিক গ্রেফতারের পর আল-ফালাহ নিয়ে এত হইচই। আসলে এই বিস্ফোরণ হয় একটি হুন্ডাই আই২০ গাড়িতে। আর সেই গাড়ির পিছনে ডাক্তার মহম্মদ উমর নবী এবং আল-ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহকারী অধ্যাপক ছিল বলে অভিযোগ।
শুধু তাই নয়, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ ডাক্তারকে গ্রেফতার করার পরই ঘটে বিস্ফোরণ। এছাড়া এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অপরাধে গ্রেফতার হওয়া মুজাম্মিল গনিও এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষক ছিলেন। তাই এখন তদন্তকারীরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে চোখ রেখেছেন। তারা বোঝার চেষ্টা করছেন কীভাবে জঙ্গিঘাঁটি হয়ে উঠল এই বিশ্ববিদ্যালয়।