
আহমেদাবাদে মাসতুতো ভাইয়ের স্ত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে হয়রানির অভিযোগে উত্তর প্রদেশের ৪৬ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্তের দাবি, তিনি নাকি ‘ঐশ্বরিক কণ্ঠস্বর’-এর নির্দেশেই এই কাজ করেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম এহরাজ হোসেন শেখ। তিনি গত তিন বছর ধরে আহমেদাবাদের জামালপুর এলাকায় বসবাস করছিলেন। ২০২৪ সালে তাঁর মাসির পুত্রবধূর প্রতি একতরফা আসক্তি তৈরি হয়। এবং সেই থেকেই তিনি ওই মহিলাকে অনুসরণ করতে শুরু করেন।
অভিযোগ, আপত্তি জানানো সত্ত্বেও এহরাজ প্রকাশ্যে মহিলার স্বামীকে জানিয়ে দেন যে তিনি তাঁকে ভালোবাসেন এবং ভবিষ্যতেও তাঁর পিছু ছাড়বেন না। এমনকি কেউ বাধা দিলে হত্যার হুমকিও দেন বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় ২০২৪ সালেই দানি লিমদা থানায় তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয় এবং মামলা এখনও বিচারাধীন। ওই মামলায় জামিন পেলেও আচরণে কোনও পরিবর্তন আসেনি বলে পুলিশ জানিয়েছে।
গত ২৩ ডিসেম্বর এহরাজ তাঁর মাসির বাড়িতে যান, যেখানে ওই মহিলা তখন ছিলেন। মাসি তাঁকে চলে যেতে বললেও তিনি অস্বীকার করেন। অভিযোগ, তিনি মহিলার হাত ধরে টেনে নিতে চান। এবং বলেন যে তিনি তাঁকে ভালোবাসেন, তাঁর সঙ্গে চলে যেতে হবে। পাশাপাশি বিচারককে মিথ্যা বলে মামলা তুলে নেওয়ার জন্যও চাপ দেন বলে অভিযোগ।
পরিস্থিতি গুরুতর হয়ে উঠলে মহিলার শাশুড়ি হস্তক্ষেপ করে তাঁকে উদ্ধার করেন। এর পর অভিযুক্ত ব্যক্তি মহিলার স্বামীকে হত্যার হুমকি দেন বলে অভিযোগ ওঠে। ঘটনার পর গায়কোয়াড় হাভেলি থানায় মহিলাটি ফের হয়রানির অভিযোগ দায়ের করেন।
এর মধ্যেই পুলিশ হেফাজতে থাকা এহরাজের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিওতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, তিনি নাকি কিছু কণ্ঠস্বর শুনছেন, যা তাঁকে নির্দেশ দিচ্ছে। তাঁর দাবি, 'এই কণ্ঠস্বর আল্লার। আল্লা আমাকে বলছেন, আবার সেখানে যাও, তাকে টেনে নিয়ে আসো।'
পুলিশ জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদের সময়ও এহরাজ একই দাবি করে গিয়েছেন এবং বারবার বলেছেন যে তিনি আল্লাহর নির্দেশেই এই কাজ করেছেন।
একজন এসিপি জানিয়েছেন, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মহিলাকে তাড়া করা, হুমকি দেওয়া এবং আদালতে মিথ্যা জবানবন্দি দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তিনি বলেন, 'এটি একতরফা প্রেমের ঘটনা। এক বছর আগেই তিনি ওই মহিলাকে অনুসরণ ও শ্লীলতাহানি করেছিলেন। মামলা চলাকালীনও তিনি চাপ সৃষ্টি করে গিয়েছেন। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।'