শীর্ষ মধ্যস্থতাকারীদের মধ্যে চলছে ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যিক চুক্তির লাস্ট ল্যাপের আলোচনা। ২টো ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে জোর দেওয়া হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। এক, কৃষি। দুই, ডেয়ারি। এই দ্বিতীয়টি নিয়েই গোলমাল বেঁধেছে। ওয়াশিংটন ডেয়ারি মার্কেট খোলার জন্য নয়াদিল্লির কাছে যতই আর্জি রাখুক না কেন, 'নিরামিষ দুধ' নিয়ে বেশ স্পর্শকাতর ভারত।
বিষয়টি ঠিক কী?
গোরু ছাড়া অন্য কোনও পশুর দুধ নিয়ে আপত্তি রয়েছে ভারতের। ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক ভাবাবেগ রক্ষার্থে দুধ নিয়ে কোনওরকম আপোস করবে না ভারত। স্পষ্ট জানানো হয়েছ আমেরিকাকে।
ভারত-আমেরিকা দ্বিপাক্ষিত বাণিজ্য চুক্তির পথে সেক্ষেত্রে রেড লাইন হতে চলেছে ডেয়ারি সেক্টর। গোরু ছাড়া অন্য কোনও মাংসাশী প্রাণির দুধ যেন আমদানি না হয় ভারতে, একথা জানিয়েছে নয়াদিল্লি। প্রয়োজনীয় সার্টিফিকেশনের কথাও বলা হয়েছে।
নয়াদিল্লির অন্যতম থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সংস্থা গ্লোবাল ট্রেন রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, 'কল্পনা করুন, আপনি এমন একটি গোরুর দুধ থেকে তৈরি মাখন খাচ্ছেন যাকে অন্য গোরুর মাংস এবং রক্ত খাওয়ানো হয়েছে। ভারত এমনটা কখনওই মেনে নেবে না।' তিনি আরও উল্লেখ করেন, ডেয়ারি প্রোডাক্টগুলি কেবলমাত্র খাদ্যদ্রব্য নয়, ভারতবাসীর কাছে সেটি নিত্যদিনের নানা ধার্মিক রীতিনীতিরও অবিচ্ছেদ্য অংশ।
এদিকে, ট্রাম্পের দেশ মনে করছে, ডেয়ারি প্রোডাক্ট নিয়ে এই ধরনের কট্টর অবস্থান বাণিজ্য চুক্তির পথে অযথা বাধার সৃষ্টি করছে। তবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুগ্ধ উৎপাদনকারী দেশ ভারত নিজের অবস্থানে অনড়।
ইন্ডিয়া টুডে টিভি-কে চলতি মাসেই শীর্ষ প্রশাসনিক এক আধিকারিক জানিয়েছিলেন, ডেয়ারি প্রোডাক্ট নিয়ে আমরা কোনও অবস্থানেই আপোস করব না।
'আমিষ-দুধে' আপত্তি ভারতের
ভারতের নানা সংস্কৃতি, ধর্মীয় বিশ্বাসের মানুষের জন্য আমেরিকায় মাংস-রক্ত খাওয়ানো গোরুর থেকে প্রাপ্ত দুধ তীব্র আপত্তির কারণ হবে। এমনটাই মনে করছে নয়াদিল্লি। কারণ দুধ কেবল খাওয়াই হয় না, ভারত দুধ-ঘি নিত্য পুজার্চনার কাজেও ব্যবহার করা হয়।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য সিয়েটল টাইমসের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল, সে দেশে গোরুদের শুয়োর, মাছ, মাংস, ঘোড়া এমনকী বিড়াল-কুকুরের মাংসও
খাওয়ানো হয়। এছাড়াও শুয়োর ও ঘোড়ার রক্ত প্রোটিন উপাদান হিসেবে দেওয়া হয় গোরুদের। আর ভারত সেখানে মাংসাশী প্রাণির দুধ আমদানিই করে না।