
SIR নিয়ে লোকসভায় ভাষণ দিতে উঠেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বুধবারের সেই ভাষণ শুরু হতেই সংসদ অধিবেশন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই তা পরিণত হয় অমিত শাহ বনাম রাহুল গান্ধীর ডিবেটে। লোকসভার বিরোধী দলনেতার হরিয়ানা নির্বাচন নিয়ে তোলা ভোট চুরির অভিযোগের জবাব দিচ্ছিলেন অমিত শাহ। সে সময়ে রাহুল উঠে দাঁড়িয়ে চ্যালেঞ্জ ছোড়েন।
শাহকে চ্যালেঞ্জ রাহুলের
এদিন কংগ্রেস সাংসদ বলেন, 'চলুন মিস্টার অমিত শাহ, আপনাকে চ্যালেঞ্জ করছি। আমার প্রেস কনফারেন্সের উপর একটি ডিবেট করুন।' পাল্টা শাহ ফুঁসে ওঠেন। তিনি বলেন, 'আমি কোন ক্রমে সংসদে ভাষণ দেব তা অন্য কেউ ঠিক করে দেবে না। একমাত্র আমি ঠিক করব।' অর্থাৎ তিনি বলতে চেয়েছেন, কোন প্রস্নের উত্তর কখন দেবেন, তার ক্রম তালিকা তিনিই নির্ধারণ করবেন।
ভোট চুরি নিয়ে বিস্ফোরক শাহ
বিরোধীদের আক্রমণ করে অমিত শাহ এদিন বলেন, 'যখন আপনারা জেতেন, নতুন পোশাক পড়ে শপথ নেন, তখন SIR খুব ভাল তাই তো? কিন্তু বিহারের মতো মুখ থুবড়ে পড়লেই ভোটার তালিকা নিয়ে সমস্যা বের করেন। এই দ্বিচারিতা আর চলবে না।'
তাঁকে থামিয়ে রাহুল উঠে দাঁড়িয়ে বলেন, 'আগে জবাব দিন নির্বাচন কমিশনারকে কেন ইমিউনিটি দেওয়া হচ্ছে?' শাহের জবাব, 'আমি ৩০ বছর ধরে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে আসছি। নিয়ম আমারও জানা আছে। আপনার কথামতো সংসদ চলবে না। এখানে আমি কতক্ষণ ভাষণ দেব তা আমিই ঠিক করব।'
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, 'একটা নয়া ট্রেন্ড শুরু হয়েছে। কেউ ইতিহাস শুনতে চায় না। কিন্তু ইতিহাস এটাই বলছে, দেশে প্রথম ভোটার তালিকা সংশোধন হয় ১৯৫২ সালে জওহরলাল নেহরুর সময়ে। দেশে প্রথম ভোট চুরি হয়েছিল যখন সর্দার বল্লবভাই প্যাটেল ২৮টি ভোটের সমর্থন পেয়েছিলেন এবং নেহরুজি পেয়েছিলেন ২টি ভোট। তারপরও দেখা যায় নেহরুজি প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলেন। দ্বিতীয়বার ভোট চুরি হয় ইন্দিরা গান্ধীর সময়ে। আদালত রায় দেওয়ার পরও তিনি ভোটে দাঁড়ানোর জন্য নিজের ক্ষেত্রেই ইমিউনিটি সিস্টেম অনুমোদন করে দিয়েছিলেন।'
সোনিয়া গান্ধীকে নিয়ে বিতর্ক
তৃতীয় ভোট চুরির কথা উল্লেখ করে অমিত শাহ বলেন, 'ভোট চুরি নিয়ে বিতর্ক সবেমাত্র দিল্লিতে সিভিল কোর্টে পৌঁছেছে। কীভাবে সনিয়া গান্ধী ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার আগেই তাঁর নাম ভোটার লিস্টে উঠে গেল তা নিয়ে মামলা দায়ের হয়েছে।'
একাধিকবার অমিত শাহের ভাষণের সময়ে এদিন প্রতিরোধ করেন রাহুল গান্ধী এবং বিরোধী বেঞ্চ। শেষ পর্যন্ত উত্তেজনা এতটাই তীব্র নয় ওয়াকআউট করেন বিরোধী সাংসদরা। শাহ বলেন, 'নেহরুজি, ঠাকুমা ইন্দিরাজি, মা সোনিয়াজির বিষয় নিয়ে এত কথা বললাম তথন এঁরা ওয়াকআউট করলেন না। কিন্তু যখনই আমি অনুপ্রবেশকারীদের দেশছাড়া করার কথা বলছি তখন এঁরা পালিয়ে গেল। এত ভয় কীসের?'