'৯০ রান করে কেউ ইনিংস ডিক্লেয়ার করেছে দেখেছেন?' পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষবিরতি নিয়ে সংসদে প্রশ্ন তুলেছিলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। জবাবদিহি চেয়েছিলেন অমিত শাহের কাছে। সোমবারের সেই প্রশ্নের জবাব মঙ্গলে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিন বলেন, 'আমায় অনেকেই প্রশ্ন করেছিলেন, আপনি যুদ্ধ কেন বন্ধ করে দিলেন? আরে মশাই যুদ্ধ করা না করা অনেক ফ্যাক্টরের উপর নির্ভর করে। অনেক রকমের পরিণাম থাকে যুদ্ধের। ফলে বিচারবিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হয়।'
অমিত শাহ এদিন সংসদে ইতিহাস স্মরণ করিয়ে বলেন, '১৯৪৮ সালে আমাদের সেনা নির্ণায়ক অবস্থানে ছিল। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল একাধিকবার না বলেছিলেন, তা সত্ত্বেও জওহরলাল নেহরু একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে দেন।' কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার বক্তব্যের সময়ে আক্ষেপের সুরে বলেছিলেন, 'আমরা তো ভেবেছিলাম এবার আমরা পাক অধিকৃত কাশ্মীর ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হবই। কিন্তু হঠাৎ দেখলাম সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা হয়ে গেল।' এর-ও জবাব এদিন দেন অমিত শাহ। তাঁর বক্তব্য, 'পাক অধিকৃত কাশ্মীরের যদি অস্তিত্ব থাকে তবে তা একমাত্র জওহরলাল নেহরুর জন্যই। ১৯৬০ সালে গাড়ি নিয়ে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল ফের বিরোধিতা করেন। গাড়ি নিয়ে আকাশবাণী ভবনে পর্যন্ত গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। সিন্ধু জলচুক্তি করে ৮০ শতাংশ ভারতের জল পাকিস্তানকে দিয়ে দিয়েছিলেন।'
ইন্দিরা গান্ধীর প্রশংসা করেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি অমিত শাহ। তিনি বলেন, '১৯৭১ সালে ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বড় জয় পেয়েছিল। দেশটি দু'টুকরো হয়ে যায়। ইতিহাস মনে রাখবে এই যুদ্ধ। কিন্তু সে সময়ে আমাদের কাছে পাকিস্তানের ৯৩ হাজার যুদ্ধবন্দি সেনা এবং ১৫ হাজার বর্গ কিলোমিটার জমি ছিল। সিমলায় চুক্তি হল কিন্তু পাক অধিকৃত কাশ্মীর চাইতেই ভুলে গেলেন তিনি।'
উল্লেখ্য, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সুরে সুর মিলিয়েই এদিন অমিত শাহ জানান, ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি হয়েছে পাকিস্তানের আর্জির পরই। সে দেশের DGMO ভারতের DGMO-কে ফোন করে সংঘর্ষবিরতির আর্জি জানান। তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সংঘর্ষবিরতির। এতে বাইরের কোনও শক্তির কোনও ভূমিকা বা অবদান নেই।