রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (RSS) প্রধান মোহন ভাগবত রবিবার বলেন যে সমস্ত ভারতীয়দের ডিএনএ এক। মুসলিম রাষ্ট্রীয় মঞ্চ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ভাগবত। সেখানেই এই বিবৃতি দেন তিনি। ভাগবত বলেন, "ধর্ম নির্বিশেষে সমস্ত ভারতীয়ের ডিএনএ একই।" তিনি বলেন যে, হিন্দু-মুসলিম ঐক্য আসলে ভুল কথা । কারণ-হিন্দু মুসলিম অভিন্ন। ধর্ম আলাদা হলেও সকলের ডিএনএ এক। আমরা সবাই ভারতবাসী। গণধোলাই বা লিঞ্চিং প্রসঙ্গে তাঁর সাফ কথা, "লিঞ্চিংয়ে জড়িতরা হিন্দুত্ববাদবিরোধী এবং গণতন্ত্রে হিন্দু বা মুসলমানদের দ্বারা আধিপত্য বিস্তার করা যায় না।" ভাগবত বলেন, , ‘‘যে বা যাঁরা গো-রক্ষার দোহাই দিয়ে গণরোষ তৈরি করে কাউকে কাউকে আক্রমণ করছেন, তাঁরাও হিন্দুত্বের বিরোধী। মনে রাখতে হবে ভারতের হিন্দু, মুসলমান একই উৎস থেকে এসেছেন।’’
সংঘের প্রধান ভাগবত আরও বলেছিলেন, "হিন্দু-মুসলিম ঐক্য বিভ্রান্তিকর, কারণ তারা পৃথক নয়, তবে এক। উপাসনা পদ্ধতি সম্পর্কে মানুষের মধ্যে কোনও পার্থক্য থাকতে পারে না। কিছু জিনিস আছে যা নিয়ে রাজনীতি করা যায় না। রাজনীতি মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারে না। রাজনীতি মানুষের ঐক্যবদ্ধ করার হাতিয়ার হতে পারে না।"
মোবন ঘাবত আরও বলেন যে, "এটি প্রমাণিত হয়েছে যে আমরা গত ৪০,০০০ বছর ধরে একই পূর্বপুরুষের বংশধর। ভারতের মানুষের ডিএনএ একই রকম। হিন্দু ও মুসলমান দু'টি দল নয়, ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কিছুই নেই, তারা ইতিমধ্যে একত্রিত।"
'গণতন্ত্রে হিন্দু বা মুসলমানদের উপর কর্তৃত্ব করা যায় না'
মোহন ভাগবত বলেন যে আমরা একটি গণতন্ত্রে বাস করি। এটি হিন্দু বা মুসলমানদের দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে না। একমাত্র ভারতীয়রা আধিপত্য করতে পারে। দেশে ঐক্য ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব নয়। জাতীয়তাবাদ ঐক্যের ভিত্তি হওয়া উচিত।
তিনি আরও বলেন যে কোনও হিন্দু যদি বলে যে এখানে কোনও মুসলমানের বাস করা উচিত নয় তবে সে ব্যক্তি হিন্দু নয়। গরু একটি পবিত্র প্রাণী, তবে যারা অন্যকে হত্যা করছে তারা হিন্দুত্বের বিরুদ্ধে যাচ্ছে। আইনে কোনও পক্ষপাত ছাড়াই তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত দেশের রাজধানী দিল্লি সংলগ্ন গাজিয়াবাদে আয়োজিত রাষ্ট্রীয় মুসলিম মঞ্চের কর্মসূচিতে ডাঃ খাজা ইফতিখার আহমেদের লেখা একটি বই উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন। ডাঃ খাজা আহমদ "আইডোলজিকাল কো-অর্ডিনেশন - এক পাহল" নামে একটি বই লিখেছেন। মুসলিম জাতীয় ফোরামের এই কর্মসূচিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি অংশ নিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত ভাষণের শুরুতেই এদিন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের প্রধান বলেন, কোনও ভোট রাজনীতি বা ইমেজ মেকওভারের জন্য তিনি এখানে বক্তব্য রাখতে আসেননি। যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী বছর উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে মুসলিমদের নিয়ে এমন উক্তির মাঝেও আসলে হিন্দুত্ব নিয়েই বার্তা দিয়েছেন আরএসএস প্রধান। উত্তরপ্রদেশে একের পর এক গো-হত্যার ঘটনায় যোগী সরকারের গায়ে মুসলিম বিরোধী তকমা লেগেছে। সেই কালি মুছতেই ঐক্যের কথা বলছেন ভাগবত।