অসমে শিশু-বিবাহের ৪,৮৭৪টিরও বেশি মামলা নথিভুক্ত করে হয়েছে। পুলিশ টানা তিনদিন রাজ্যে ক্রমাগত ধরপাকড় (ক্র্যাকডাউন) চালিয়েছে। রবিবার পর্যন্ত নাবালিকা মেয়েদের বিয়ে করা বা এই ধরনের বিয়ের সুবিধা দেওয়ার জন্য প্রায় ২৫০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
অপরাধীদের গ্রেফতার করা হবে এবং বিয়ে অবৈধ ঘোষণা করা হবে। জানিয়েছে অসমের সরকার। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেছেন, যে পুরুষরা ১৪ বছরের কম বয়সী মেয়েদের বিয়ে করেছে, বা বিয়েতে সাহায্য করেছে, তাদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করা হবে। এবং ওই বিয়ে অবৈধ বলে ঘোষণা করা হবে।
এক দল নাবালিকা। কারও আবার কোলে রয়েছে শিশু। কারও সঙ্গে রয়েছে কোনও প্রবীণা। সকলে মিলে চড়াও হয়েছেন অসমের ধুবরির এক থানায়। দাবি, তাদের স্বামীদের ছেড়ে দিতে হবে। অসমে নাবালিকার বিয়ে রুখতে গ্রেফতারি চালিয়েছে পুলিশ। এ বার সেই ধৃতদের স্ত্রীরাই চড়াও হন থানায়। তাদের সরাতে কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে পুলিশ।
শনিবার ধুবরির তামাবিল থানায় চড়াও হয় ধৃতদের স্ত্রীরা। কোলে শিশুসন্তানকে নিয়ে অনেকেই দাবি তোলেন, স্বামীদের ছেড়ে দিতে হবে। রাস্তা অবরোধ করেও বসে পড়েন। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়।
নাবালিকাদের বিয়ে রুখতে অসমে ধরপাকড় করছে সরকার এবং পুলিশ। গ্রেফতার করা হচ্ছে নাবালিকাদের স্বামীকে।
মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, ‘এক জন প্রাপ্তবয়স্ক নাবালিকাকে বিয়ে করলে তা ধর্ষণের শামিল। সেই কিশোরী কী কষ্টের মধ্যে দিয়ে যায়, আমরা কি বোঝার চেষ্টা করেছি? আমি কি আমার মেয়েকে ১২-১৩ বছরে বিয়ে দেব? ভবিষ্যতে লক্ষ লক্ষ নাবালিকাকে বিয়ের থেকে রক্ষা করতে একটা প্রজন্মকে কষ্ট ভোগ করতেই হবে। ধৃতদের প্রতি আমাদের কোনও সমবেদনা নেই। নাবালিকাদের বিয়ে রুখতে গ্রেফতারি চলবেই।’
ক’দিন ধরে হিমন্ত রাজ্যে বাল্য বিবাহ বন্ধের ব্যাপারে সরব হয়েছেন। অসমে শিশু-বিয়ের হার তীব্র আকার নিয়েছে। কম বয়সে বিয়ে হওয়া মেয়ে অসময়ে সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে মারা যাচ্ছে। শিশুকেও বাঁচানো যাচ্ছে না বেশিরভাগ ক্ষেত্রে। ফলে জন্মকালে শিশু মৃত্যুর হারে লাগাম দেওয়া যাচ্ছে না কিছুতে। গত সপ্তাহেই অসমের মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, নাবালিকাকে বিয়ে করা পুরুষদের বিরুদ্ধে সরকার পকসো আইনে মামলা দায়ের করে গ্রেফতার করবে।