Advertisement

Aurangzeb Tomb: বাবরির মতোই ঔরঙ্গজেবের সমাধি গুঁড়িয়ে ফেলা হবে, হিন্দু সংগঠনগুলির হুঁশিয়ারি

মহারাষ্ট্রের ছত্রপতি সম্ভাজিনগরে অবস্থিত মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের সমাধি ঘিরে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) এবং বজরং দল দাবি তুলেছে যে সমাধিটি অবিলম্বে সরিয়ে দিতে হবে, নাহলে ১৯৯২ সালের বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পুনরাবৃত্তি হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনগুলি।

ঔরঙ্গজেবের সমাধিসৌধে নিরাপত্তা।-ফাইল ছবিঔরঙ্গজেবের সমাধিসৌধে নিরাপত্তা।-ফাইল ছবি
Aajtak Bangla
  • দিল্লি ,
  • 17 Mar 2025,
  • अपडेटेड 9:22 AM IST
  • মহারাষ্ট্রের ছত্রপতি সম্ভাজিনগরে অবস্থিত মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের সমাধি ঘিরে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে।
  • বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) এবং বজরং দল দাবি তুলেছে যে সমাধিটি অবিলম্বে সরিয়ে দিতে হবে।

মহারাষ্ট্রের ছত্রপতি সম্ভাজিনগরে অবস্থিত মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের সমাধি ঘিরে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) এবং বজরং দল দাবি তুলেছে যে সমাধিটি অবিলম্বে সরিয়ে দিতে হবে। নাহলে ১৯৯২ সালের বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পুনরাবৃত্তি হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনগুলি।

সমাধি অপসারণের দাবি এবং বিক্ষোভের পরিকল্পনা
ভিএইচপি এবং বজরং দল ঘোষণা করেছে যে, তারা সোমবার সকাল ১১.৩০টায় খুলদাবাদে ঔরঙ্গজেবের সমাধি অপসারণের দাবিতে রাজ্যব্যাপী বিক্ষোভ করবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমাধিস্থলের চারপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে এবং প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সংগঠনগুলির দাবি, ঔরঙ্গজেবের সমাধি পরাধীনতা ও নৃশংসতার প্রতীক এবং এটি সরিয়ে ফেলা উচিত। তারা মহারাষ্ট্র সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে বড় আকারের আন্দোলন গড়ে তোলা হবে, এমনকি করসেবা করে সমাধি ভাঙার উদ্যোগও নেওয়া হতে পারে।

ভিএইচপি ও বজরং দলের অবস্থান
ভিএইচপির আঞ্চলিক প্রধান কিশোর চহ্বান, বজরং দলের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী নীতিন মহাজন এবং সন্দেশ ভেগড়ে এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, “এই সমাধি দাসত্বের প্রতীক। ঔরঙ্গজেবছিলেন অত্যাচারী শাসক। তাই তার সমাধি সংরক্ষণ করা উচিত নয়।”

তারা আরও জানিয়েছে, মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন তহসিল ও জেলা কালেক্টর অফিসের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হবে। এসময় মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশের উদ্দেশে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হবে।

সরকারি প্রতিক্রিয়া ও সমর্থন
মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বাধীন শিবসেনার সদস্য এবং রাজ্যের মন্ত্রী সঞ্জয় শিরসাত ভিএইচপি ও বজরং দলের দাবিকে সমর্থন করেছেন। তিনি বলেন, “ঔরঙ্গজেবের মতো অত্যাচারী শাসকের সমাধি রক্ষার কোনো যৌক্তিকতা নেই। এটি অপসারণ করা উচিত।”

বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া
এনসিপি (এসপি) নেতা জিতেন্দ্র আওহাদ এই দাবির বিরোধিতা করে বলেন, “রাবণের নাম ছাড়া কি রামায়ণ বলা সম্ভব? আফজল খান ছাড়া কি প্রতাপগড়ের যুদ্ধ বর্ণনা করা যাবে?” তার বক্তব্য, ইতিহাসের অংশ হিসেবে ঔরঙ্গজেবের সমাধি সংরক্ষণ করা উচিত।

Advertisement

অন্যদিকে, মহারাষ্ট্র সমাজবাদী পার্টির বিধায়ক আবু আজমির ঔরঙ্গজেবপ্রসঙ্গে দেওয়া মন্তব্য ঘিরেও বিতর্ক দানা বেঁধেছে। আজমি আওরঙ্গজেবকে একতরফাভাবে নিষ্ঠুর ও অত্যাচারী বলে দেখানোর বিরোধিতা করেন এবং বলেন, ইতিহাসকে বিকৃত করা হচ্ছে। তার এই মন্তব্যের পরই তাকে ২৬শে মার্চ পর্যন্ত বিধানসভা থেকে বরখাস্ত করা হয় এবং তার বিরুদ্ধে একাধিক এফআইআর দায়ের করা হয়।

প্রশাসনিক ব্যবস্থা ও নিরাপত্তা জোরদার
খুলদাবাদে ঔরঙ্গজেবের সমাধি ঘিরে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেজন্য মহারাষ্ট্র পুলিশ কড়া নিরাপত্তা জারি করেছে। সমাধিস্থলের চারপাশে ব্যারিকেড বসানো হয়েছে এবং রাজ্য রিজার্ভ পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

চলচ্চিত্র ও সাম্প্রতিক বিতর্ক
সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ছাভা’ সিনেমা, যা মারাঠা শাসক ছত্রপতি সম্ভাজি মহারাজের জীবনী অবলম্বনে তৈরি, এই বিতর্ককে আরও উসকে দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। সিনেমায় ঔরঙ্গজেবের ভূমিকা তুলে ধরা হয়েছে, যিনি সম্ভাজি মহারাজকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিলেন। এই ঐতিহাসিক প্রসঙ্গও ঔরঙ্গজেবের সমাধি অপসারণের দাবিকে উসকে দিচ্ছে বলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মত।

ঔরঙ্গজেবের সমাধি অপসারণ নিয়ে মহারাষ্ট্রে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। হিন্দু সংগঠনগুলির দাবি ও হুঁশিয়ারির পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন কড়া নিরাপত্তা জারি করেছে। অন্যদিকে, রাজনৈতিক মহলে এ নিয়ে বিভক্ত মতামত দেখা যাচ্ছে। ইতিহাসের সংরক্ষণ বনাম রাজনৈতিক দাবির লড়াইয়ে এই ইস্যু আগামী দিনে আরও বড় আকার নিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

Read more!
Advertisement
Advertisement