অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের কাজ চলছে। এই খননের সময় একটি প্রাচীন মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। এতে অনেক মূর্তি ও স্তম্ভ রয়েছে। শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক চম্পত রাই নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি একটি ছবি শেয়ার করেছেন যাতে এই মন্দিরের অংশগুলি সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। চম্পত রাই প্রায়ই মন্দিরের নির্মাণ সম্পর্কিত ছবি শেয়ার করেন। বর্তমানে রাম মন্দিরের প্রথম তলার নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে। উল্লেখ্য, এই প্রথম মন্দির নির্মাণের সময় খননকার্যে পাওয়া বস্তুর ছবি প্রকাশিত হয়েছে, যার মধ্যে এক ডজনেরও বেশি মূর্তি, স্তম্ভ, পাথর ইত্যাদি রয়েছে। এসব পাথরে দেব-দেবীর ভাস্কর্য খোদাই করা আছে। মন্দিরগুলিতে স্থাপিত স্তম্ভগুলিও ছবিতে দৃশ্যমান। বলা হচ্ছে, খননকালে পাওয়া এই ধ্বংসাবশেষগুলি ভক্তদের দেখার জন্য রামলালার মন্দিরে রাখা হবে।
জানা যায়, যখন মন্দির নির্মাণ শুরু হয় তখন প্রায় ৪০ থেকে ৫০ ফুট খনন করা হয়েছিল। মন্দির কমপ্লেক্স খননের সময় এই সমস্ত বস্তু পাওয়া গেছে, যা হিন্দু পক্ষের দাবিকে আরও শক্তিশালী করে। এএসআই জরিপেও অনেক বস্তু পাওয়া গেছে। মন্দির-মসজিদ মামলার শুনানির সময় আদালতও এগুলোতে গুরুত্ব দিয়েছিল।
কবে রামলালাকে দেখা যাবে?
রাম মন্দির নির্মাণের কাজ খুব দ্রুত চলছে। প্রথম তলা প্রায় প্রস্তুত। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এটি উদ্বোধন করবেন। মূর্তিগুলিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠার পরও নির্মাণ কাজ চলবে। রাম মন্দির ট্রাস্টের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের মতে, প্রথম তলা এবং দ্বিতীয় তলার কাজ ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে। জানুয়ারির মধ্যে প্রতিমা স্থাপন করা হবে, তারপর ভক্তরা দর্শন করতে পারবেন। অর্থাৎ এই বছরের শেষ নাগাদ মানুষ মন্দিরের ভিতরে রামলালা দেখতে শুরু করবে।
কয়েক দফায় তৈরি হচ্ছে রাম মন্দির। প্রথম ধাপের কাজ শেষ হবে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে। যেখানে দ্বিতীয় ধাপের কাজ শেষ হবে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে এবং তৃতীয় ধাপের কাজ শেষ হবে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে। অর্থাৎ প্রায় আড়াই বছরের মধ্যে মন্দিরের চূড়ান্ত নির্মাণকাজ শেষ হবে।
কেমন হবে রাম মন্দির?
গত মাসে নির্মাণাধীন মন্দিরের ছবি প্রকাশ করেছে রাম মন্দির ট্রাস্ট। এতে মন্দিরের সামনের চেহারা দেখা গেছে। কোনো কোনোটিতে অভ্যন্তরীণ দৃশ্যও দেখানো হয়েছে। মন্দিরটি এত বড় করে তৈরি করা হচ্ছে যে এটি ১০০০ বছর ধরে দাঁড়িয়ে থাকবে। শ্রী রাম জন্মভূমি মন্দিরের নীচতলায়, পূর্ব ও পশ্চিম দিকে দৈর্ঘ্য ৩৮০ ফুট এবং উত্তর ও দক্ষিণ দিকে প্রস্থ হবে ২৫০ ফুট। ভূতলের পাশাপাশি তিন তলা হতে চলেছে এই মন্দির। মন্দিরের মোট উচ্চতা হবে ৩৯২ ফুট যার মধ্যে নীচতলা হবে ১৬৬ ফুট, প্রথম তলা হবে ১৪৪ ফুট এবং দ্বিতীয় তলা হবে ৮২ ফুট।
এখানে গর্ভগৃহের আশেপাশে খোদাই করা বেলেপাথর ব্যবহার করা হয়েছে। এ জন্য প্রায় ৪ লাখ ৭০ হাজার ঘনফুট খোদাই করা পাথর আনা হয়েছে। একই সঙ্গে মন্দিরের আঙিনা এলাকাসহ মোট ৮ একর জমিতে একটি আয়তাকার দ্বিতল পরিক্রমা মার্গ প্রাচীরও নির্মাণ করা হচ্ছে। এটি অভ্যন্তরীণ নীচতলা থেকে ১৮ ফুট উঁচু হবে এবং এর প্রস্থ হবে ১৪ ফুট। জন্মভূমি কমপ্লেক্সে একটি রামকথা কুঞ্জও প্রতিষ্ঠিত হবে।
মন্দির চত্বরের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে
এসবের মধ্যেই রাম জন্মভূমির নিরাপত্তায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। এখন এর নিরাপত্তার দায়িত্ব এসএসএফ-এর হাতে থাকবে, যা সম্প্রতি ইউপি সরকার গঠন করেছে। বিশেষ নিরাপত্তার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া ইউপি পুলিশ ও পিএসি-এর সেরা কর্মী বাছাই করে এই বাহিনী তৈরি করা হয়েছে। নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে অযোধ্যায় পৌঁছেছে এসএসএফ ব্যাটালিয়ন।