২৩ জুন পাটনায় বিরোধীদের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হতে চলেছে। আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন বিজেপিকে কীভাবে পরাজিত করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করাই এই বৈঠকের লক্ষ্য। এই বৈঠক বিরোধীদের মনোবল বাড়াতে পারে, যারে অধিকাংশ সময় নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বে জড়াতে দেখা যায়। এই বৈঠক টেনশনে ফেলতে পারে বিজেপিকে। আর এর মাঝেই বৈঠকের আগের দিন পাটনায় লালুর বাড়িতে অভিষেককে সঙ্গে নিয়ে পৌঁছলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিরোধী ঐক্য নিয়ে আগামিকাল বিহারের রাজধানী পাটনায় একটি বড় বৈঠক হতে চলেছে। এটি পরিচালনা করছেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। অনেক বিরোধী দলের নেতারা এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে যোগ দিতে পাটনায় পৌঁছেছেন। বৈঠকে হাজির থাকবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বৈঠকে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার বিকেলেই পাটনায় পৌঁছন মমতা। পাটনায় পা রেখেই লালু যাদবের সঙ্গে দেখা করেন তৃণমূল প্রধান ও বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সময় তিনি বলেন যে লালুজি সম্পূর্ণ সুস্থ, তাঁকে দেখে তিনি খুব খুশি। লালুজি এবং আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত মধুর। আগামিকাল অনুষ্ঠিত বৈঠকে কী হবে তা আজ বলতে পারছি না। আমরা শুধু সিদ্ধান্ত নিতে এসেছি যে সবাই একসঙ্গে লড়াই করে জিতব। আগামিকাল বৈঠকের পর বাকিগুলোর জবাব দেব।
লালুর সঙ্গে দেখা করার পর মমতা বলেন, আমাদের সংযোগ একটি পরিবারের মতো। আমি লালুজিকে অনেক শ্রদ্ধা করি, রাবড়ি দেবী, লালুজির সঙ্গে দেখা করে আমি খুশি। তিনি একজন সিনিয়র নেতা। তিনি অনেক দিন জেল ও হাসপাতালে ছিলেন। লালু যাদব এখনও ফিট এবং তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারেন।
মমতা বলেন, বিরোধী নেতারা পাটনায় জড়ো হচ্ছেন বিজেপির বিরুদ্ধে ‘একটি পরিবারের মতো’ লড়াই করার জন্য। তিনি বলেন, আমরা এখানে এসেছি কারণ একসঙ্গে লড়ব, পারিবারের মত লড়াই করব। মমতার সঙ্গে পাটনায় এসেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
এদিন বিকেল পাঁচটা নাগাদ লালুপ্রসাদ যাদবের বাড়িতে পৌঁছন মমতা । বাড়িতে ছিলেন তেজস্বী যাদব, লালুপ্রসাদ যাদবের স্ত্রী রাবড়ি দেবীও । এদিন মমতার সঙ্গে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও ছিলেন গুরুত্বপূর্ণ কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম । দলীয় সূত্রে খবর, রাজ্যে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁদের বাড়ি যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তেজস্বী যাদব । বিহার পৌঁছেই সেই আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে লালু-সাক্ষাতে গেলেন মমতা । মিনিট কুড়ি কথোপকথন হয় দুই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের । বেশিরভাগটাই ছিল কুশল বিনিময় । এদিন লালুপ্রসাদ যাদব এবং তাঁর স্ত্রী রাবড়ি দেবীর স্বাস্থ্যের বিষয়ে জানতে চান মমতা । কলকাতা থেকে সকলের জন্যই আলাদা আলাদা উপহার গিয়েছিলেন তিনি । সঙ্গে ছিল কলকাতার মিষ্টি এবং ফুলও । অন্যদিকে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি শাড়ি উপহার দিয়েছেন লালুপত্নী রাবড়ি দেবী। একইসঙ্গে যাদব পরিবারের তরফ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে একটি বুদ্ধমূর্তিও তুলে দেওয়া হয় । আর দেওয়া হয় মধুবনী কাজ করা উত্তরীয়। বিরোধী বৈঠকে যোগ দিতে গিয়ে আলাদা করে লালুপ্রসাদ যাদবের বাড়িতে যাওয়া বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল ।
এদিন সন্ধ্যায় পটনায় জেলা সার্কিট হাউজে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে আসেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। দীর্ঘ ১৫ মিনিট ধরে বৈঠক করেন তাঁরা। সেই বৈঠকেই একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে আসে।