
করোনা আবহে বিধানসভা নির্বাচন হল বিহারে। এই অতিমারী প্রেক্ষাপটে ভোট সম্পন্ন ও ফলপ্রকাশ রীতিমতো চ্যালেঞ্জিং ছিল। অবশ্য নিউ নর্মাল জীবনে ভার্চুয়াল মিটিং করে নির্বাচনী প্রচারও সব রাজনৈতিক দলের কাছেই ছিল চ্যালেঞ্জ। তবে সফল উভয়েই। কেবল জট কাটল না জোটেরই।
নির্বাচনের প্রচারপর্ব থেকেই নীতীশ কুমারের দল জেডি(ইউ)কে সমর্থন করে এসেছে বিজেপি। এনডিএ জোটের পক্ষ থেকেই বিহারবাসীকে ভোটের আহ্বান দেন নরেন্দ্র মোদী। অন্যদিকে, প্রতিপক্ষ লালু প্রসাদের দল রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)। নীতীশের বিরুদ্ধে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ছিলেন লালু-পুত্র তেজস্বী যাদব। ১৫ বছরে সবচেয়ে খারাপ ফল করলেও কুর্সিতে ফিরছেন নীতীশই। আর অবশ্যই তা জোটের রায়ে।
শুরু থেকে নীতীশেই আস্থা রেখেছেন নরেন্দ্র মোদী। এনডিএ জোটের হয়ে প্রচার করলেও এই নির্বাচনে বিহারে নজিরবিহীন সাফল্য পেয়েছে বিজেপি। ২৪৩ আসনের মধ্যে মহাগঠবন্ধন পেয়েছে ১২৫ আসন, যা পেরিয়েছে ম্যাজিক ফিগারও। এর মধ্যে ৭৪ আসন পেয়েছে বিজেপি একাই। তবে প্রতিশ্রুতিমত মুখ্যমন্ত্রীপদে নীতীশ কুমারকেই কুর্সি দিতে চায় মোদী-শাহের দল। যদিও সম্প্রতি খবর আসে দলের পারফরমেন্স বিচার করে এই পদ গ্রহণে অনিচ্ছুক ছিলেন নীতীশ৷
তবে একক দল হিসেবে সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছে আরজেডি। নির্বাচন কমিশনের থেকে প্রাপ্ত পরিসংখ্যান জানাচ্ছে এবারের নির্বাচনে ভোট পড়েছে মাত্র ৫৭ শতাংশ। পড়শি রাজ্য ঝাড়খন্ড এবং পশ্চিমবঙ্গে ৬৫.৪ শতাংশ, ৮৪.৩%। কিন্তু সেই পরিসংখ্যানে বিহারের মানুষের রায় আরজেডির দিকেই৷ নীতীশের দল সেখানে তৃতীয় স্থানে। তবে জোটের শক্ত জটে মসনদে এবারও নীতীশই।
এমনকি বিহারের নির্বাচনে ভাল আসনে জয়লাভ করেছে সিপিআইএম। তবে জেডিইউ, বিজেপি এবং এলজেপির ভোটের সম্মেলন সংখ্যাগরিষ্ঠতার পক্ষে যথেষ্ট। কিন্তু জোটের জট ছিলই প্রথম থেকে। এনডিএ জোটে এলজেপি হঠাৎই নীতীশ বিরোধী হয়ে পড়ে। জেডিইউ প্রধান এ প্রসঙ্গে জানায় চিরাগ পাসওয়ান এবং এলজেপি দলের জেরে তাদের ভোট হারিয়েছে ২৫-৩০ আসন। তাই এবারের জোটে চিরাগের দল জোটে থাকবে কি না তা প্রশ্নের মুখে এখনও।
ক্ষমতার বিচারে এই সিদ্ধান্ত নিতে পারে কেবল নরেন্দ্র মোদীর দলই, সংবাদমাধ্যমকে এমনটাই জানিয়েছিলেন নীতীশ কুমার। সোমবারই বিজয়ী বিধায়কদের নিয়ে এনডিএ জোট নিয়ে বৈঠক রয়েছে। এনডিএর বৈঠকে শিলমোহর পড়তেই রাজভবনে গিয়ে বিহারের রাজ্যপাল ফাগু চৌহ্বানের কাছে সরকার গঠনের দাবি পেশ করেন নীতীশ কুমার। জানা যাচ্ছে সোমবার বিকেল সাড়ে চারটের সময় মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিতে চলেছেন জেডিইউ প্রধান। জোটের জট কাটিয়ে বিহারের মসনদের ক্ষমতা বন্টনের হিসেবের প্রতিক্ষায় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।