Advertisement

Bihar Election Result 2025: SIR বিরোধিতা ফ্যাক্টর হল না বিহারে, ছাব্বিশে বাংলার ক্ষেত্রেও যে প্রশ্নচিহ্ন তুলে দিল?

SIR। তিন অক্ষরের এই ইংরেজি শব্দবন্ধটি বিহারে যত চর্চায় ছিল। বাংলাতেও তেমনই। ভোটার তালিকা সংশোধন ঘিরে ভারতের রাজনীতিতে অতীতে এমন বিতর্ক হয়নি। আজ যখন বিহারে নীতীশ কুমার ও NDA-র জয়জরকার, তখন স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, SIR বা স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশন ইস্যু কতটা প্রভাব ফেলল বিহারের ভোটে? প্রশ্নটি নিয়ে চর্চার অবকাশ আছে, কারণ ২০২৬ সালে বাংলায় ভোট। বঙ্গেও তো SIR প্রক্রিয়া চলছে।

বিহার ইলেকশনে SIRবিহার ইলেকশনে SIR
সায়ন নস্কর
  • কলকাতা,
  • 14 Nov 2025,
  • अपडेटेड 4:06 PM IST
  • SIR। তিন অক্ষরের এই ইংরেজি শব্দবন্ধটি বিহারে যত চর্চায় ছিল
  • বাংলাতেও তেমনই। ভোটার তালিকা সংশোধন ঘিরে ভারতের রাজনীতিতে অতীতে এমন বিতর্ক হয়নি।
  • SIR বা স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশন ইস্যু কতটা প্রভাব ফেলল বিহারের ভোটে?

SIR। তিন অক্ষরের এই ইংরেজি শব্দবন্ধটি বিহারে যত চর্চায় ছিল। বাংলাতেও তেমনই। ভোটার তালিকা সংশোধন ঘিরে ভারতের রাজনীতিতে অতীতে এমন বিতর্ক হয়নি। আজ যখন বিহারে নীতীশ কুমার ও NDA-র জয়জরকার, তখন স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, SIR বা স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশন ইস্যু কতটা প্রভাব ফেলল বিহারের ভোটে? প্রশ্নটি নিয়ে চর্চার অবকাশ আছে, কারণ ২০২৬ সালে বাংলায় ভোট। বঙ্গেও তো SIR প্রক্রিয়া চলছে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ভাষায় বলতে গেলে, বলা যেতে পারে, 'Popular Sovereignty'। অর্থাত্‍ জনতাই শেষ কথা। ন্যারেটিভ তার পরে। চুম্বকে বলতে গেলে, SIR ইস্যু নামক Bandwagon Effect বা হাওয়ার রাজনীতিতে চুপিসারে জনতার মনে কখন হাওয়া বদল হয়ে গিয়েছে, তা বোধ হয় ঠাহর করতে পারেনি বিরোধীরা।

বিহারে কীভাবে হঠাৎ চর্চায় এল SIR?

আসলে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন চলতি বছরের ২৪ জুন SIR বা স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশনের নোটিফেকশন বের করে। ভুয়ো ভোটার, মৃত ভোটার এবং অবৈধ ভোটারদের বাদ দেওয়ার জন্য SIR করা হচ্ছে বলে জানায় নির্বাচন কমিশন। ২৫ জুন থেকে ২৬ জুলাই পর্যন্ত ফর্ম ফিলআপ পর্ব চলে। খসড়া ভোটার লিস্ট বেরয় ১ অগাস্ট ২০২৫। আবার ১ অগাস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দাবি ও শুনানি পর্ব চলে। ফাইনাল ভোটার লিস্ট বেরয় ৩০ সেপ্টেম্বর।

SIR নিয়ে হাজার অভিযোগ

SIR ঘোষণার পর থেকেই এই প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে গর্জে ওঠে বিরোধীরা। আরজেডি, বাম, কংগ্রেস সহ মোটামুটি সকলেই একযোগে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে তোপ দাগে। সমলোচনার মুখে পড়েন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার। তাঁকে বিরোধীরা বিজেপির দালাল বলেও কটাক্ষ করে।

বিজেপির প্রধান বিরোধী মুখ তেজস্বী যাদব প্রথম থেকেই কমিশনকে আক্রমণ করে। তিনি দাবি করেন, SIR করে আদতে বিরোধীদের ভোট কাটার ষড়যন্ত্র করছে বিরোধীরা। পাশাপাশি তিনি খসড়া ভোটার লিস্টে নিজের নাম নেই বলেও দাবি করেন।

Advertisement

ও দিকে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও SIR নিয়ে অ্যাটাকিং মোডে ছিলেন। তিনি বলেন, 'SIR হল প্রাতিষ্ঠানিক ভোটচুরি।' তাঁর মতে, নির্বাচন কমিশন বিজেপির হয়ে কাজ করছে। সবরকম ভাবে ভোট চুরি করা হচ্ছে।

যদিও এমন দাবিকে পাত্তা দেয়নি বিজেপি বা নীতীশ কুমার। তারা SIR-এর সমর্থনেই এগিয়ে এসেছে। পাশে দাঁড়িয়েছে গোটা প্রক্রিয়ার। এ দিন বিজেপির প্রেম শুক্লা বলেন, 'কংগ্রেস SIR-এর বিষয়ে নানা কথা বলেছে। যার জন্য তারা ১টা সিটে রয়েছে।

আর আপাতত যা ছবি, সেখানে বিরোধীদের SIR বিরোধীতাকে পাত্তাই দিল না জনগণ। তারা সব আশঙ্কা উড়িয়ে NDA-এর পাশেই দাঁড়িয়েছে। যার ফলে ২০০-এর বেশি আসনে এগিয়ে গিয়েছে NDA।


বাংলা ও SIR

বাংলা সহ একাধিক রাজ্যে SIR ঘোষণা করা হয়েছে। 8 নভেম্বর থেকে বাড়ি বাড়ি যেতে শুরু করেছেন BLO-রা। তারা এনুমারেশন ফর্ম দিচ্ছেন। পাশাপাশি ফল ফিলআপে করছেন সাহায্য। আর বাংলায় SIR নিয়েও তৃণমূল ও বিজেপি, দুই যুযুধান পক্ষই একে অপরকে কড়া আক্রমণ করছে।

SIR নিয়ে একাধিক অভিযোগ রয়েছে তৃণমূলের। তাদের মতে, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাধারণ ভোটার, ন্যায্য ভোটারের নাম বাদ দেবে বিজেপি। বিশেষত, যারা বাংলাদেশ থেকে শরণার্থী হিসাবে এই রাজ্যে এসেছে, তাদের ভোটার লিস্ট থেকে বাদ যাবে নাম।

এই প্রসঙ্গে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি নির্বাচন কমিশন এবং জ্ঞানের কুমারকে আক্রমণ করেন। পাশাপাশি তার নিশানায় বিজেপিও ছিল। তিনি নিজের একাধিক বক্তব্যে দাবি করেন, বিজেপির সুবিধা করে দিতেই SIR করা হচ্ছে। তাতে সাধারণ মানুষের নাম কাটা যাবে ভোটার লিস্ট থেকে। মতুয়ারা, রাজবংশীদের নাম বাদ যাবে।

এমনকী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সুরে সুর মিলিয়েছেন অখিলেশ যাদবও। তিনি এ দিন এক্স-এ লেখেন, 'বিহারে যেই খেলা SIR নিয়ে হয়েছে সেটা বাংলা, তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশে হবে না। কারণ, ইতিমধ্যেই এই নিবার্চনী ষড়যন্ত্র সামনে চলে এসেছে। এরপর আমরা খেলব। ওদের খেলতে হবে না।'

এ দিকে বঙ্গ বিজেপি বরাবরই এই প্রক্রিয়ার পক্ষে রয়েছে। তারা পরিষ্কার জানিয়েছে, এর আগেও বাংলা সহ গোটা দেশে SIR হয়েছে। এর মাধ্যমে ভুয়ো ভোটার, অন্য রাজ্যে স্থায়ীভাবে স্থানান্তরিত হয়ে যাওয়া ভোটার, মৃত ভোটারের নাম বাদ যাবে। যোগ্য ভোটারদের কোনও চিন্তা নেই।

এই প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, SIR হলে প্রায় ১ কোটি ভোটারের নাম বাদ যাবে। যার ফলে তৃণমূলের সঙ্গে গেরুয়া শিবিরের ভোট মার্জিন কমবে।

এছাড়া বিজেপি আরও দাবি করে যে, SIR শুরু হওয়ার পরই অবৈধ ভোটাররা এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছে। তারা বাংলাদেশ এবং মায়ানমার ফিরছে।

বাংলায় কী হতে পারে?

বিহারে SIR করার পর হু হু করে বেড়েছে বিজেপি ও আরজেডি-এর ভোট। NDA এগিয়ে রয়েছে ২০০-এর উপর আসনে। এখন প্রশ্ন হল, পশ্চিমঙ্গেও কি এমনটা হওয়ার চান্স রয়েছে? তৃণমূলকে হারিয়ে নবান্ন দখল করবে বিজেপি?

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশে মতে, পশ্চিমবঙ্গ এবং বিহারের জল, হওয়া এক নয়। এখানকার মানুষের পালস সম্পূর্ণ আলাদা। তাই বিহারের প্রতিফলন এখানে হওয়ার চান্স কম। বরং তৃণমূল নিজের সংগঠনের জোরে কিছুটা হলেও অ্যাডভান্টেজ পাবে।

আবার এর উল্টো একটা মতও রয়েছে। তাদের মতে, বিজেপি ও তৃণমূলের ভোটের তফার মাত্র ৪ থেকে ৫ শতাংশের মতো। আর যদি কোনওভাবে SIR-এর মাধ্যমে ভুয়ো, অবৈধ এবং মৃত ভোটাররা বাদ চলে যায়, তাহলে কিছুটা হলেও এগিয়ে যেতে পারে বিজেপি।

এখন দেখার, এই দুই মতের মধ্যে ঠিক কোনটা ফলে যায়। তবে সেই সম্পর্কে নিশ্চিত করে জানতে চাইলে ২০২৬ ভোটের রেজাল্ট পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া সত্যিই কোনও গতি নেই।

গেরুয়া ঝড়
সবকিছু ঠিক ঠাক থাকলে বিরোধী মহাগঠবন্ধনকে খড়কুটোর মতো উড়িয়ে বিহারের কুর্সি দখল করতে চলেছেন নীতীশ কুমার। ৪টে পর্যন্ত ২০৮টি সিটে এগিয়ে রয়েছে এনডিএ। ও দিকে ২৮টি সিটে লিড করছে মহাগঠবন্ধন। 

Advertisement

Read more!
Advertisement
Advertisement