বিহারের মোট ভোটারের মধ্যে ৫১ লক্ষ জনের নাম বাদ দেওয়া হবে। বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। যাকে বলা হচ্ছে ‘স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন’ বা SIR। সেখানেই এই তথ্য উঠে এসেছে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, SIR চলাকালীন দেখা গেছে এদের মধ্যে ১৮ লক্ষ ভোটারের মৃত্যু হয়েছে, ২৬ লক্ষ ভোটার এমন আছেন যাঁরা বিহারের বাইরে বা অন্য বিধানসভা কেন্দ্রে চলে গিয়েছেন। এছাড়াও দু জায়গাতে ভোটারকার্ড রয়েছে এমন ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৭ লক্ষ। সেই কারণে ৫১ লক্ষ ভোটারকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে। কমিশনের দাবি, যোগ্য ভোটরারাই যাতে শুধুমাত্র নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ পান সেজন্য এই পদক্ষেপ। কমিশন সূত্রে খবর, এই জরিপের সময় প্রায় ১১ হাজার ভোটারের কোনও তথ্য মেলেনি।
নির্বাচন কমিশন আরও জানিয়েছে, বিহারে ভোটার তালিকায় নাম ছিল প্রায় ৭.৮৯ কোটি মানুষের। এঁদের মধ্যে ৯৭.৩০ শতাংশ তাঁদের গণনা ফর্ম জমা করেছেন। সেগুলো ২০২৫ সালের ১ অগাস্টের মধ্যে প্রাথমিক তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। মাত্র ২.৭০ ভোটার এখনও ফর্ম জমা করেননি। এই গোটা প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে এখনও পর্যন্ত ৯৮ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি বুথ লেভেল অফিসার এবং প্রায় দেড় লক্ষ বুথ লেভেল এজেন্ট কাজ করছেন।
ভোটার তালিকা থেকে একজন বৈধ ভোটারের নামও যেন বাদ না যায় সেজন্য একাধিক পদক্ষেপ করছে নির্বাচন কমিশন। কমিশন সূত্রে খবর, ভুল এড়ানোর জন্য মৃত বা অন্য স্থানে চলে যাওয়া ভোটারদের নাম স্থানীয় রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া হচ্ছে। ১ অগাস্ট প্রাথমিক ভোটার তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পর ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অভিযোগ জনা করা যাবে। এরপর ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে কমিশন।
বিহারের এই SIR নিয়ে প্রথম থেকেই বিতর্কে জড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন। এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলাও হয়েছে। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে সেই সব মামলার একত্রিত করে শুনানি শুরু হয়েছে বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চে।
এদিকে নির্বাচন কমিশনের এই পদক্ষেপের প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটার তালিকায় নাম বাদ দেওয়াকে কেন্দ্র ও কমিশনের চক্রান্ত হিসেবে দেখছেন তিনি। একুশের ধর্মাতলার মঞ্চ থেকে তা নিয়ে ঝাঁঝালো বক্তব্যও রেখেছেন। জানিয়েছেন, বিহারের মতো পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দিলে তিনি ঘেরাও কর্মসূচি করবেন।