জয়ের দোরগোড়ায় গিয়েও ফিরে এল ভারত। এমনটাই মনে করছেন ভূ-কৌশলবিদ ব্রহ্ম চেলেনি। ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতির ঘোষণা অনভিপ্রেত বলেই মনে করছেন তিনি। সীমান্ত এলাকায় সেনাবহর বাড়াতে শুরু করেছিল পাকিস্তান। শনিবার সে কথা জানিয়েছিল বিদেশ মন্ত্রক। হাই অ্যালার্ট জারি করা হয় LoC-তে। প্রত্যাঘাতের জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুত ছিল ভারতও। তবে শনিবার সন্ধ্যাতেই পরিস্থিতি ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে যায়। ডোনাল্ড ট্রাম্প আচমকাই ঘোষণা করেন তার মধ্যস্থতায় ভারত এবং পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতিতে সায় দিয়েছে। দু'পক্ষের তরফে সরকারি বিবৃতি দিয়ে সংঘর্ষবিতির কথা আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণাও করে দেয়। যদিও সেই সরকারি বিবৃতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতার কোনও উল্লেখ ছিল না।
ব্রহ্ম চেলেনি এই সংঘর্ষবিরতিতে অসন্তুষ্ট। তাঁর কথায়, 'ভারত ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে ব্যর্থ হয়েছে। ফের অতীতের ভুল করছে। পরিস্থিতি ভারতের অনুকূলেই ছিল। পাকিস্তান নিজে যতটা ভেবেছিল তার থেকেও দুর্বল ওদের এয়ার ডিফেন্স ফোর্স। ওরা ঝাঁকে ঝাঁকে ড্রোন এবং মিসাইল ছুড়েছিল কিন্তু ভারতের কোনও ক্ষতি করতে পারেনি। তবে ভারত স্বল্প পরিমাণ মিসাইল ছুড়েও নিশানায় আঘাত করতে সক্ষম হয়েছে ভারত।'
সামরিক শক্তিতে আপার হ্যান্ড থাকা সত্ত্বেও কেন সংঘর্ষবিরতিতে সায় দিল ভারত? প্রশ্ন করছেন এই ভূ-কৌশলবিদ। তাঁর বক্তব্য, 'জয়ের দোরগোড়ায় এসে পরাজয় ছিনিয়ে আনল ভারত। বারবার একই ভুল করে ভারত। ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটায়।'
ব্রহ্ম চেলেনি পূর্বের একাধিক ঘটনার সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতির তুলনা টেনে বলেন, '১৯৭২ সালে যুদ্ধে জয়ের পরও মধ্যস্থতার টেবিলে পাকিস্তানের থেকে কিছু না নিয়েই ফিরে এসেছিল ভারত। ২০২১ সালে কূটনৈতিক কৈলাশ হাইট খালি করা হয়েছিল মধ্যস্থতার টেবিলে। চিনের ডিজাইন করা লাদাখের বাফার জোনও মেনে নেওয়া হয়েছিল। আর এখন অপারেশন সিঁদুর। ২৬ জন পর্যটকের হত্যার বদলা নিতে এই সামরিক অভিযান চালায় ভারত। স্বামীহারা স্ত্রীদের সিঁথির সিঁদুরের প্রতীক হিসেবে এই অপারেশনের নামকরণ করা হয়। যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। পাকিস্তান একের পর এক মিসাইল হামলা করার পরও এই অপারেশন এভাবে শেষ করে দেওয়া অনেক প্রশ্নের জন্ম দিল।' তিনি আরও বলেন, 'ইতিহাস কিন্তু ভারতের এই সিদ্ধান্তকে মানবিকতার নজরে দেখবে না।'