বৃহস্পতিবার সংসদের এথিক্স কমিটির কাছে বিস্ফোরক হলফনামা জমা দিলেন ব্যবসায়ী দর্শন হিরানন্দানি। তাতে তিনি দাবি করেছেন, মহুয়া মৈত্র তাঁর সংসদ অ্যাকাউন্টের লগইন আইডি এবং পাসওয়ার্ড তাঁর সঙ্গে শেয়ার করেছিলেন। তাঁর হয়ে(মহুয়ার) যাতে তিনি প্রশ্ন পোস্ট করতে পারেন, সেই জন্যই এমনটা করেছিলেন মহুয়া। হলফনামায় এমনই দাবি হিরানন্দানির।
সম্প্রতি তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে ভয়ানক অভিযোগ তোলেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। তাঁর দাবি ছিল, মহুয়া মৈত্র সংসদে সুনির্দিষ্ট কিছু প্রশ্ন করার বিনিময়ে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছিলেন। নিশিকান্ত দুবে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জয় অনন্ত দেহরায়ের একটি চিঠির উল্লেখ করেন। নিশিকান্তের দাবি, উক্ত আইনজীবী জানিয়েছেন, মহুয়া মৈত্র এবং ব্যবসায়ী দর্শন হিরানন্দানির মধ্যে যে ঘুষের লেনদেন হয়েছে, তার 'অকাট্য' প্রমাণ রয়েছে।
নিশিকান্ত দুবের দাবি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছিলেন মহুয়া মৈত্র। তিনি এই দাবি 'মানহানিকর' বলে পাল্টা অভিযোগ করেন। বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে এবং আইনজীলী জয় অনন্ত দেহরায়কে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছিলেন মহুয়া।
মহুয়া মৈত্র বলেন, 'লোকসভার সদস্য হিসাবে তাঁর দায়িত্ব পালনের জন্য যে কোনও ধরণের সুবিধা' গ্রহণ করার এই অভিযোগগুলি 'মানহানিকর, মিথ্যা, ভিত্তিহীন এবং এর বিন্দুমাত্র প্রমাণ নেই।'
এর আগে যদিও হিরানন্দানি গোষ্ঠী নিশিকান্ত দুবের অভিযোগ অস্বীকার করেছিল। জানিয়েছিল তারা 'রাজনীতির ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নয়।'
কিন্তু, বৃহস্পতিবার দর্শন হিরানন্দানির কথা পাল্টে যায়। তিনি দাবি করেন, মহুয়া মৈত্র 'দ্রুত জাতীয় স্তরে নিজের পরিচিতি গড়তে' চেয়েছিলেন। তাঁকে 'তাঁর বন্ধু এবং উপদেষ্টারা পরামর্শ দিয়েছিলেন, খ্যাতি পাওয়ার সবচেয়ে সহজ পথ হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা।'
হিরানন্দানির দাবি, মহুয়া মৈত্র 'আদানিকে টার্গেট করে প্রধানমন্ত্রীকে অপমানিত ও বিব্রত করার চেষ্টা করেছিলেন।'
'তিনি সাংসদ(MP) হিসাবে আমার সঙ্গে তাঁর ইমেল আইডি শেয়ার করেছেন, যাতে আমি তাঁকে তথ্য পাঠাতে পারি এবং তিনি সংসদে প্রশ্ন তুলতে পারেন,' বলেছেন হিরানন্দানি। তিনি বলেন, 'আমি তাঁর প্রস্তাব গ্রহণ করেছিলাম।'
তিনি দাবি করেন, 'মহুয়া মৈত্র আমার কাছে বারবার নানা দাবি করতে থাকেন। আমার কাছ থেকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা চাইতে থাকেন। তিনি আমার কাছে দামি বিলাসবহুল জিনিস, দিল্লিতে তাঁর সরকারী বাংলোর সংস্কারের খরচ, ভ্রমণের খরচ জোগানো ইত্যাদি দাবি করেন।'
হিরানন্দানি আরও দাবি করেন, তাঁর মনে হচ্ছিল, মহুয়া মৈত্র তাঁর 'অনায্য সুযোগ নিচ্ছেন' এবং এগুলি করার জন্য তাঁকে 'চাপ' দিচ্ছেন।
হিরানন্দানি বলেন, যেহেতু বিষয়টির সঙ্গে 'তাঁর নাম সরাসরি জড়িত', সেই কারণে তিনি হলফনামা দাখিল করছেন।