'টাকার বদলে প্রশ্ন' কাণ্ডে আবারও নতুন তথ্য সামনে এল। তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র দাবি করেছেন যে তিনি দর্শন হীরানন্দানির দুবাই অফিসটি কেবল সচিবালয়ের পরিষেবার জন্য ব্যবহার করেছিলেন। মহুয়া স্বীকার করেছেন যে তিনি হীরানন্দানিকে তাঁর লোকসভা পোর্টালের লগইন ও পাসওয়ার্ড দিয়েছিলেন। যার মাধ্যমে লোকসভার প্রশ্ন পোস্ট করা হয়েছিল। মহুয়া দেশে এবং বিদেশ থেকে লগইন করলেও ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি মন্ত্রকের (MEITY) লগ থেকে জানা যায় যে একই দিনে লোকসভা পোর্টালে তাঁর লগইন ও পাসওয়ার্ড শুধুমাত্র দুবাই থেকে নয়, নিউ জার্সি এবং বেঙ্গালুরু থেকেও ব্যবহার করা হয়েছিল। সেই সময় মহুয়া মৈত্র কলকাতা এবং তারপর দিল্লিতে উপস্থিত ছিলেন।
মমতা পাশে দাঁড়িয়েছেন
অন্যদিকে, মহুয়া মৈত্রকে সংসদ থেকে সরানোর ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী কয়েক সপ্তাহ ধরে নীরবতা বজায় রেখেছিলেন। গতকাল তিনি বলেছেন যে বিজেপি মহুয়ার লোকসভার সদস্যপদ কেড়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে। তবে এটি মহুয়াকে আরও জনপ্রিয় করে তুলবে এবং এখন তিনি সংসদে যা বলতেন, এখন তিনি বাইরে বলবেন।
মহুয়ার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ?
সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। তিনি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জয় অনন্ত দেহদরাইয়ের চিঠির বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন। তাতে বলা হয়েছিল যে ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানির নির্দেশে মহুয়া ক্রমাগত আদানি গোষ্ঠী এবং সংসদে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে নিশানা করেছিলেন। বিনিময়ে তিনি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে উপহার পান। মহুয়ার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ ছিল যে তিনি তাঁর সংসদীয় আইডির লগইন ও পাসওয়ার্ড হীরানন্দানিকে দিয়েছিলেন, যার কারণে ব্যবসায়ী সেই আইডি ব্যবহার করে মহুয়ার পক্ষে সংসদে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছিলেন। এরপর লোকসভার স্পিকারের কাছে অভিযোগ করা হয় এবং তদন্ত চলে যায় এথিক্স কমিটির কাছে। এই মাসের শুরুতে লোকসভার এথিক্স কমিটি ক্যাশ-ফর-কোয়ারি মামলার তদন্তের পরে লোকসভা থেকে মহুয়াকে বহিষ্কারের সুপারিশ করে। মহুয়া মৈত্র যদিও তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলেছেন।
এরপর কী হবে?
এথিক্স কমিটি এখন এই বিশদ রিপোর্ট আজ (শুক্রবার) লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে জমা দেবে। এরপর ৪ ডিসেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া শীতকালীন অধিবেশনে এই রিপোর্ট পেশ করা হবে লোকসভায়। এথিক্স কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য সেখানে ভোটাভুটি হবে। বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, এথিক্স কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে লোকসভা সচিবালয়ও সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কমিটির রিপোর্ট মেনে মহুয়াকে সংসদ থেকে বহিষ্কার করতে পারে লোকসভা সচিবালয়। যদি এটি ঘটে তবে মহুয়ার কাছে সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য আরও আইনি বিকল্প খোলা থাকবে।