সাংসদ পদ খারিজ হওয়ার পর শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে মুখ খুললেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তাঁর অভিযোগ,আদানি নিয়ে মুখ খোলায় কণ্ঠরোধের চেষ্টা করা হচ্ছে। মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি ভয় পান না। এ দিন সনিয়া তনয় বলেন,'আমি সংসদে প্রশ্ন করেছিলাম, আদানির ভুয়ো কোম্পানিতে ২০ হাজার কোটি টাকা কে বিনিয়োগ করেছে? জানতে চেয়েছিলাম, প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে আদানির সম্পর্ক কী?'
আদানি-মোদী সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন করার কারণে তাঁর লোকসভার সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন রাহুল গান্ধী। তাঁর কথায়,'আমার সাংসদ পদ থেকে খারিজ করা হয়েছে কারণ আমি প্রশ্ন তুলছি। আদানির ভুয়ো কোম্পানিতে ২০ হাজার কোটি টাকা কে বিনিয়োগ করেছে? নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আদানির কী সম্পর্ক? ভারতের গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছি। কোনও কিছুতেই ভয় পাই না।'
তাঁকে রোখা যাবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা। তাঁর কথায়,'ওরা আমাকে চিরকালের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করলেও আমার কাজ চালিয়ে যাব। আমি সংসদের ভিতরে আছি কী নেই তাতে আমার কিস্যু যায় আসে না! দেশের জন্য লড়াই চালিয়ে যাব।'
রাহুল গান্ধী ক্ষমা চাইলে বিষয়টি মিটে যেত বলে দাবি করেছেন বিজেপি নেতারা। তার উত্তরে রাহুল জানান,'আমি ক্ষমা চাইব না। আমি গান্ধী। আমার নাম বীর সাভারকর নয়। গান্ধীরা কারও কাছে ক্ষমা চায় না।'
আরও পড়ুন- ক্ষমা চাইলেই পদ বাঁচত রাহুলের, মানহানির মামলায় আগেও তিনবার মাফ করেছিল আদালত
মোদী পদবি নিয়ে মন্তব্য করায় রাহুলকে দু'বছরের সাজা দিয়েছে সুরাতের আদালত। বিজেপির দাবি, মোদী পদবি ওবিসি-দের। রাহুল সমগ্র ওবিসি সমাজকে অপমান করেছেন। এ দিন সেই অভিযোগের জবাব দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা। তাঁর মন্তব্য,'এটা ওবিসি ইস্যু নয়। এটা আদানি এবং মোদীজির সম্পর্কের বিষয়। আপনি যদি ভারত জোড় যাত্রার সময় দেওয়া আমার বক্তব্যগুলি দেখেন, আমি কখনও এমন কথা বলিনি। আমি সবসময় একতা ও ভ্রাতৃত্বের কথা বলেছি।'
সাংসদ পদ খারিজ হওয়ার পর রাহুলের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিরোধী নেতানেত্রীরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে অখিলেশ যাদবরা বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন। এতে কি আগামী দিনে বিরোধীদের একজোট হওয়ার পথ প্রশস্ত হল? সেই ইঙ্গিত মিলেছে রাহুলের কথাতেও। সনিয়া তনয় বলেন,'সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আগামী দিনে একসঙ্গে কাজ করব।'
উল্লেখ্য,মোদী পদবি একটি মানহানির মামলায় বৃহস্পতিবার রাহুল গান্ধীকে দোষী সাব্যস্ত করে ২ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় সুরাতের নিম্ন আদালত। তার পর শুক্রবার লোকসভার সচিবালয় নোটিসে বলা হয়,'ভারতীয় সংবিধানের ১০২(১) ই অনুচ্ছেদ এবং জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-র ৮ নম্বর ধারা অনুযায়ী রাহুল গান্ধীকে কেরলের ওয়েনাডের সাংসদ পদ থেকে খারিজ করা হল। কারণ সুরাতের আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছে।'