দেশজুড়ে ফের বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড, রাজস্থান এবং কর্নাটকের মতো রাজ্যে ইতিমধ্যেই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। রাজ্যগুলির স্বাস্থ্য দফতর সাধারণ মানুষকে ভিড়ের মধ্যে মাস্ক পরা, হাত ধোয়া এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার সুপারিশ করছে। যদিও সরকারের তরফে জানানো হয়েছে যে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে সাবধানের মার নেই!
মহারাষ্ট্রে একদিনে ৪৩টি নতুন কেস, ৩৫ জন মুম্বইয়ের
মহারাষ্ট্রের জনস্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, ২৫ মে ২০২৫-এ রাজ্যে ৪৩টি নতুন কোভিড পজিটিভ কেস ধরা পড়েছে। এর মধ্যে ৩৫টি কেস মুম্বই শহরের। জানুয়ারি ২০২৫ থেকে এখনও পর্যন্ত মহারাষ্ট্রে ৪৭৮টি করোনা পজিটিভ কেস রেকর্ড হয়েছে। তার মধ্যে ৩০০ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। বর্তমানে ২০৯ জন রোগী সক্রিয়। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, আতঙ্কের কিছু নেই। লক্ষণ দেখলেই চিকিৎসা শুরু করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ঝাড়খণ্ডে মুম্বইফেরত রোগী পজিটিভ
ঝাড়খণ্ডের রাজধানী রাঁচিতে এক কোভিড আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। আক্রান্ত ব্যক্তি হলেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র সমালোচক লাল বিজয় শাহদেব। তিনি মুম্বই থেকে ফিরছিলেন এবং বিমানে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রী ডঃ ইরফান আনসারি জানান, রাজ্য সরকার সম্পূর্ণ সতর্ক এবং কেন্দ্রীয় গাইডলাইনের অপেক্ষায় রয়েছে। তিনি সকলকে ভিড়ের মধ্যে মাস্ক পরার আবেদন করেছেন এবং বলেন, সতর্কতাই সুরক্ষা। এই সংক্রমণ বাইরের, রাজ্যে বড়সড় সংক্রমণের আশঙ্কা নেই।
রাজস্থানে তিনটি নতুন কেস, আক্রান্ত দুই মাসের শিশু
রাজস্থানে আজ তিনটি নতুন করোনা কেস ধরা পড়েছে। AIIMS জোধপুরে এক ২ মাসের শিশুর কোভিড পজিটিভ ধরা পড়েছে। RNT উদয়পুরে এক ২৭ বছর বয়সী পুরুষ এবং Eternal হাসপাতাল, জয়পুরে এক ৬৮ বছর বয়সী বৃদ্ধের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। জানুয়ারি ২০২৫ থেকে রাজ্যে মোট ১৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এখনও পর্যন্ত কোনও মৃত্যুর খবর নেই। স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্টে বলা হয়েছে, বেশিরভাগ রোগীর অবস্থা স্থিতিশীল।
কর্নাটকে ৮৪ বছরের বৃদ্ধের মৃত্যু
কর্নাটকের স্বাস্থ্য মন্ত্রী দিনেশ গুণ্ডু রাও জানিয়েছেন, ৮৪ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তবে তাঁর আগে থেকেই হৃদরোগ, টিবি এবং হিপ রিপ্লেসমেন্টের মতো গুরুতর সমস্যা ছিল। বর্তমানে কর্নাটকে ৩৮টি সক্রিয় কেস রয়েছে, যার মধ্যে ৩২টি বেঙ্গালুরুতে। সরকার RT-PCR টেস্ট বাড়ানোর, SARI ও ILI রোগীদের পরীক্ষার এবং প্রতি সপ্তাহে টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজরি কমিটির বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মন্ত্রী বলেন, ‘পরিস্থিতি উদ্বেগজনক নয়, তবে সতর্ক থাকা জরুরি। লকডাউনের কোনও পরিকল্পনা নেই।’
দেশে কোভিডের দু’টি নতুন ভ্যারিয়েন্ট
ভারতে ফের বাড়তে শুরু করেছে করোনা সংক্রমণ। INSACOG-এর সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, দেশে দু’টি নতুন ভ্যারিয়েন্ট চিহ্নিত হয়েছে— NB.1.8.1 এবং LF.7। NB.1.8.1-এর একটি কেস এপ্রিল মাসে তামিলনাড়ুতে পাওয়া গেছে, আর LF.7-এর চারটি কেস মে মাসে রিপোর্ট হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এই দু’টি ভ্যারিয়েন্টকে ‘Variants Under Monitoring’ তালিকায় রেখেছে। এখনও পর্যন্ত এগুলিকে ‘Variants of Concern’ বা ‘Variants of Interest’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়নি। তবে বিভিন্ন রিপোর্ট বলছে, চিন এবং এশিয়ার অন্যান্য দেশে কোভিড বৃদ্ধির পেছনে এই ভ্যারিয়েন্টগুলিই দায়ী হতে পারে।