কর্নাটকের চিত্রদুর্গা জেলায় নাবলিকা মেয়ের পালিয়ে বিয়েকে কেন্দ্র করে এক ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘিরে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে এবং পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মৃতের পরিবার।
ঘটনা কী?
গিলাকেনাহাল্লির বাসিন্দা অজ্জয় (৫০) সোমবার হোলালকেরে থানার সামনে বিষ পান করেন এবং কিছুক্ষণ পরেই তাঁর মৃত্যু হয়। এরপর পরিবারের সদস্যরা থানার গেটের সামনে মৃতদেহ রেখে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। রাস্তা অবরোধ হওয়ায় প্রায় এক কিলোমিটার পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
অভিযোগ অনুযায়ী, অজ্জয় কয়েক সপ্তাহ আগে থানায় মেয়ের নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন, তাঁর মেয়ে নাবালিকা এবং কাউকে না জানিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে।
পুলিশের তদন্তে কী মিলল?
পুলিশ জানায়, মেয়ের আধার কার্ড ও স্কুলের নথি অনুসারে তাঁর বয়স ১৯ বছর, অর্থাৎ তিনি প্রাপ্তবয়স্ক। এক সপ্তাহ পরে মেয়েটি ফিরে আসে এবং জানায়, সে স্বেচ্ছায় তার সঙ্গীর সঙ্গে (ভোভি সম্প্রদায়, এসসি/এসটি) থাকতে চায়। তার বক্তব্যের ভিত্তিতেই নিখোঁজের মামলা বন্ধ করা হয়।
এর পর পরিবার একটি নতুন জন্ম সনদ জমা দেয়, যেখানে মেয়েটিকে ১৮ বছরের নিচে দেখানো হয়েছে এবং পকসো আইনের অধীনে মামলা করার দাবি জানানো হয়। পুলিশ সেই নতুন নথির সত্যতা যাচাই করতে শুরু করে। কিন্তু এই প্রক্রিয়া চলাকালীনই মানসিক চাপে অজ্জয় আত্মহত্যা করেন।
পুলিশ কী বলছে?
চিত্রদুর্গা জেলার পুলিশ সুপার রঞ্জিত কুমার বান্দারু বলেন, 'মেয়েটি নিখোঁজ নয়। স্কুল ও আধারের নথি অনুযায়ী তার বয়স ১৯ বছর। প্রথম অভিযোগেও তার বয়স ১৯ উল্লেখ করা ছিল। পরে পরিবার আরেকটি নথি জমা দিয়েছে, যা যাচাইয়ের প্রক্রিয়ায় ছিল। ততক্ষণে অজ্জয় আত্মহত্যা করেন।'
পুলিশ সুপার স্পষ্ট করে দিয়েছেন, পুলিশের পক্ষ থেকে কোনও অবহেলা হয়নি। সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে। তাঁর মতে, আন্তঃজাতিক বিবাহকে ঘিরেই অজ্জয়ের মানসিক যন্ত্রণা এই চরম সিদ্ধান্তের দিকে ঠেলে দিয়েছে।
আইনি ব্যবস্থা
পুলিশ ইতিমধ্যে বিএনএস ধারা ৩০৬ (আত্মহত্যায় প্ররোচনা) অনুযায়ী মামলা দায়ের করেছে এবং ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। মেয়েটি লিঙ্গায়াত সম্প্রদায়ের এবং তাঁর সঙ্গী ভোভি (এসসি/এসটি) সম্প্রদায়ের। এই ঘটনা নিয়ে এলাকায় এখনও উত্তেজনা বিরাজ করছে।