ভারতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এখন আর শুধু প্রযুক্তিগত পরিমণ্ডলে সীমাবদ্ধ নয়, বরং বিভিন্ন কর্মক্ষেত্র দখল করে নিচ্ছে। এর ব্যতিক্রম নয় দেশের আদালত কক্ষও। সম্প্রতি এক অভিনব সংলাপের মাধ্যমে এই পরিবর্তনের সাক্ষী হল ভারতের সর্বোচ্চ আদালত। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় সুপ্রিম কোর্টে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) দ্বারা চালিত একজন আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেন এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপন করেন—ভারতে মৃত্যুদণ্ড কি সাংবিধানিক?
AI আইনজীবীর জবাব
প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় এআই আইনজীবীকে জিজ্ঞাসা করেন, "ভারতে মৃত্যুদণ্ড সাংবিধানিক কিনা?" উত্তরে এআই আইনজীবী জানান, "হ্যাঁ, মৃত্যুদণ্ড ভারতে সাংবিধানিক। এটি সুপ্রিম কোর্ট দ্বারা নির্ধারিত বিরলতম ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, যেখানে অপরাধটি অত্যন্ত জঘন্য এবং সেই অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া উপযুক্ত বলে বিবেচিত হয়।" উপস্থিত বিচারপতি এবং অন্যান্য আইনজীবীরা এআই আইনজীবীর এমন রসবোধপূর্ণ প্রতিক্রিয়ায় মুগ্ধ হন।
জাতীয় বিচারিক যাদুঘরের উদ্বোধন
চন্দ্রচূড় এই মতবিনিময় করেন সুপ্রিম কোর্টের জাতীয় বিচারিক যাদুঘর ও সংরক্ষণাগার (এনজেএমএ) উদ্বোধন অনুষ্ঠানে। তিনি জানান, যাদুঘর তৈরিতে দেড় বছর সময় লেগেছে এবং বাস্তবায়নে প্রায় ছয় মাস লেগেছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "আমাদের উদ্দেশ্য ছিল এই যাদুঘরটি শুধুমাত্র নিদর্শন সংগ্রহের স্থান নয়, বরং বিচার ব্যবস্থার গুরুত্ব এবং নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের প্রতি প্রতিশ্রুতি প্রদর্শনের স্থান হবে।"
ন্যায়বিচার প্রদানে প্রযুক্তির ব্যবহার
প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় এর আগেও ন্যায়বিচার প্রদানে এআই এবং অন্যান্য প্রযুক্তির ভূমিকার বিষয়ে বলেছেন। তার মতে, এআই-এর ব্যবহার বিচার প্রক্রিয়ার গতি বাড়াতে সাহায্য করতে পারে, যা দেশের নাগরিকদের ন্যায়বিচার পাওয়ার প্রক্রিয়াকে আরও সুগম করবে।
অবসর ও পরবর্তী প্রধান বিচারপতি
প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় ১০ নভেম্বর অবসর নিতে চলেছেন, এবং বিচারপতি সঞ্জীব খান্না তার স্থলাভিষিক্ত হবেন। চন্দ্রচূড়ের অবসর উপলক্ষে তার বিচারিক এবং প্রশাসনিক নেতৃত্বে এআই ও প্রযুক্তির সংযোজনকে উল্লেখযোগ্য একটি পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
এখন দেখার বিষয় হল, প্রযুক্তির সহায়তায় ভারতীয় বিচার ব্যবস্থা ভবিষ্যতে আরও কেমন করে এগিয়ে যায় এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার কীভাবে আরও কার্যকরী হয়।