দিল্লি সরকার ২০২২-২৩ এর জন্য বাজেট পেশ করে দিয়েছে। এই বাজেটে দিল্লি সরকার চাকরি, স্বাস্থ্য, নতুন মার্কেট, গ্রিন এনার্জি, রিটেল সেক্টরের উপর রয়েছে ৭৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকার বাজেটে সরকার আগামী পাঁচ বছরে কুড়ি লাখ চাকরি ঘোষণা করেছে।
দিল্লি সরকার চাকরিতে গ্রিন জবসের ওপর জোর দিচ্ছে। উপ-মুখ্যমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রীত্ব সামলানো মণীশ সিসোদিয়া বাজেট পেশ করতে গিয়ে জানিয়েছেন, আপ সরকারের এটি অষ্টম বাজেট। বৈপ্লবিক কাজ হয়েছে গত সাত বছরে। বাজেট পেশ করতে গিয়ে জানিয়েছেন, গত বছর আপ সরকার দেশভক্তি বাজেট পেশ করেছিল। এবার আমাদের বাজেট রোজগার বাজেট। তিনি বলেন, যে সরকারের লক্ষ্য আগামী পাঁচ বছরে ২০ লক্ষ চাকরি দেওয়া।
২০ লক্ষ চাকরির লক্ষ্য
তাঁরা জানিয়েছেন যে আমরা আগামী পাঁচ বছরে ক্ষুদ্র ক্ষেত্রে ৩ লক্ষ চাকরি এবং এক বছরে এক লক্ষ কুড়ি হাজার এর বেশি নতুন রোজগারের পরিস্থিতি তৈরি করব। জানিয়েছেন, রোজগার করার জন্য দিল্লিতে ৫ টি বাজারকে ডেভলপ করা হবে। এর জন্য ১০০ কোটি টাকা আমন্ত্রণ করা হয়েছে।
মণীশ সিসোদিয়া জানিয়েছেন দেশের জিডিপিতে দিল্লির অংশও ২০১১তে ভারতের ৩.৯৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২১-এ ৪.২১ শতাংশ হয়ে গিয়েছে। দিল্লি বাজেটে ২০২২-২৩ এ নগর উন্নয়নের জন্য ৬ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা বন্টন করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন যে, দিল্লির রোজগার বাজার পোর্টাল ২ আনা হবে। এতে আগের রাউন্ডে ১৫ লক্ষ লোক চাকুরিপ্রার্থী এবং ১০ লক্ষ লোক চাকরি যারা দেবেন সে সমস্ত এমপ্লয়ার সামনে এসেছেন। এর মাধ্যমে প্রতি বছর ১ লাখ নতুন চাকরি দেওয়া হবে।
দিল্লি সরকার এর শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং পরিবহণ বাজেট
শিক্ষা বাজেট ১৬ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা
স্বাস্থ্য বাজেট ৯ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা
পরিবহণ বাজেট ৯ হাজার ৫৪০ কোটি টাকা
জানা যাবে যে সরকারের পয়সা দিয়ে কতটা চাকরি তৈরি হয়েছে
দিল্লি সরকার নিজেদের প্রত্যেক বিভাগে এম্প্লয়মেন্ট অডিট করবে। তাতে জানা যাবে যে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় কত চাকরি তৈরি হয়েছে এবং কত টাকা খরচ করা হয়েছে। মানুষের টাকা খরচা করে চাকরি তৈরি হয়েছে কত তার হিসেব পাওয়া যাবে। দিল্লি সরকার, আম আদমি মহল্লা ক্লিনিক এবং আম আদমি পলি ক্লিনিক এর জন্য ৪৭৫ কোটি টাকা বিতরণ করেছেন। এখনও পর্যন্ত ৫.৪৯ কোটি লোক মহল্লা ক্লিনিকে চিকিৎসা করিয়েছেন। এতে খরচ বেড়েছে দিল্লির স্কুলগুলিতে। স্কুল ক্লিনিক শুরু করা হয়েছে তাদের বাচ্চাদের চেক-আপ করা হচ্ছে। এর মধ্যে বাচ্চাদের মানসিক স্বাস্থ্য প্রতি ৬ মাসে পরীক্ষা করা হবে।
সমস্ত নাগরিকদেরই হেলথ কার্ড
মনীশ সিসোদিয়া জানিয়েছেন দিল্লি সরকার দুটি বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। যাতে দিল্লি সমস্ত নাগরিকদের হেলথ কার্ড উপলব্ধ হবে। এই সময়ে আরও ভালো চিকিৎসার করতে সুবিধে হবে। এর জন্য ১৬০ কোটি বরাদ্দ করা হয়েছে। নিঃশুল্ক হেল্পলাইন শুরু করা হয়েছে। যার কাছে কার্ড থাকবে, তারা এই হেল্প লাইনে ফোন করে জিজ্ঞাসা করে নিতে পারেন। যে কোন, রোগের জন্য কি চিকিৎসা করাতে হবে। আধারে হাসপাতালে অ্যাপয়েন্টমেন্ট দেওয়া হবে। করোনার সময় ৪৫০ জন যোগা শিক্ষক ১৫ হাজারের বেশি লোককে যোগা শিখিয়েছেন। এ জন্য ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে।
বিদ্যুৎ বিলে সাবসিডি
দিল্লি সরকার ২০২২-এ দেশের জন্য বিদ্যুৎ বিলের জন্য ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন।
ফুড, বাজার, খাদ্য বিপণন সেক্টরে বরাদ্দ
নাইট লাইফে ফোকাস করা হচ্ছে। মণীশ সিসোদিয়া বিধানসভাতে জানিয়েছেন যে দিল্লির ফুডের সঙ্গে পরিচয় করানো হবে। নতুন ফুড ট্রাক পলিসি তৈরি করা হবে রাত ৮ টা থেকে রাত্রি দুটো পর্যন্ত ফুড ট্রাক লাগানো যাবে। রোজগারের সুযোগ তৈরি হবে। সরকার দিল্লির বিভিন্ন সঙ্গে পরিচয় করাবে এবং তাকে ডেভলপ করাবে। ক্লাউড কিচেনের সংখ্যা প্রতি বছর কুড়ি শতাংশ করে বাড়ছে। এখন কুড়ি হাজারের বেশি ক্লাউড কিচেন রয়েছে এবং দু'লক্ষ বেশি লোক রোজগার দিচ্ছে। এছাড়া মহিলা ড্রাইভারদের ইলেকট্রনিক অটো চালানো পারমিশন দেওয়া হচ্ছে। স্টার্টআপ পলিসিকেও বলা হচ্ছে। পাশাপাশি গান্ধীনগরে নতুন বড় মার্কেট তৈরি করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে দিল্লিকে প্রগতিশীল করে তুলতে আরও এক পদক্ষেপে এগিয়ে নিয়ে চলেছে অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকার।