গুজরাটের কচ্ছ্বে অতি প্রাচীন জীবাশ্ম পাওয়া গেছে। বিজ্ঞানীদের দাবি, এই জীবাশ্মগুলি বাসুকি সাপের। এটি ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় সাপ। এর চেয়ে বড় অ্যানাকোন্ডা আর নেই। কিংবা ডাইনোসরের যুগের দৈত্য টি রেক্স ডাইনোসরও এতবড় ছিল না। বাসুকি নাগের জীবাশ্ম পাওয়া গেছে কচ্ছের পাননধরো লাইটনাইট খনিতে।
এটি সেই একই সাপ যা সমুদ্র মন্থনে উল্লেখ করা হয়েছে। এর সাহায্যে মন্দার পর্বতকে মন্থন চাকার মতো ঘোরানো হয়েছিল। যার কারণে সমুদ্র থেকে অমৃত ও বিষের মতো অনেক গুরুত্বপূর্ণ জিনিস বেরিয়ে এসেছে। বিজ্ঞানীরা এই খনি থেকে বাসুকি নাগের মেরুদণ্ডের হাড়ের ২৭টি অংশ উদ্ধার করেছেন। এর বৈজ্ঞানিক নাম ভাসুকি ইন্ডিকাস।
বিজ্ঞানীরা বলেছিলেন যে এর আকারটি আজকের অজগরের মতো বিশাল ছিল। তবে বিষাক্ত না। সায়েন্টিফিক রিপোর্টস জার্নালে প্রকাশিত সমীক্ষা অনুসারে, আইআইটি রুরকির জীবাশ্মবিদ দেবজিৎ দত্ত বলেছেন যে, এর আকার থেকে বোঝা যায় যে এটি ছিল বাসুকি নাগ। ধীর গতিতে চলা বিপজ্জনক শিকারী।
দেবজিৎ জানান, অ্যানাকোন্ডা ও অজগরের মতোই এটি তার শিকারকে চেপে হত্যা করত। কিন্তু যখন বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বাড়তে থাকে, তখন এই সাপের জনসংখ্যা কমতে থাকে। এটা বিশ্বাস করা হয় যে, ওই সাপের স্বাভাবিক দৈর্ঘ্য ছিল ৩৬ থেকে ৪৯ ফুট। তাদের ওজন ছিল প্রায় ১০০০ কেজি।
ভগবান শিবের সর্পকে সাপের রাজা মনে করা হয়। বাসুকি নাগকে হিন্দু ভগবান শিবের সর্প বলা হয়। তাকে সাপের রাজা বলা হত। এই প্রাগৈতিহাসিক সাপকে তিতানোবোভার প্রতিপক্ষ বলে মনে করা হয়। ২০০৯ সালে কলম্বিয়ার একটি কয়লা খনিতে টাইটানোবোয়ার জীবাশ্ম আবিষ্কৃত হয়। সেটি প্রায় ৪২ ফুট লম্বা ছিল। ওজন ছিল প্রায় ১১০০ কেজি। এই সাপটি ৫.৮০-৬.০০ কোটি বছর আগে পাওয়া গিয়েছিল।
এটি টিটানোবোয়ার চেয়ে বড় ছিল কিনা তা নিয়ে গবেষণা করা হচ্ছে। আইআইটি রুরকির অধ্যাপক এবং এই সাপটি আবিষ্কারকারী দলের সদস্য সুনীল বাজপেয়ী বলেছেন যে, বাসুকির আকারকে টাইটানোবোয়ার সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। কিন্তু উভয়ের মেরুদণ্ডের হাড়ে পার্থক্য ছিল। এখনই বলা ঠিক হবে না যে বাসুকি আকারের দিক থেকে টাইটানোবোয়ার চেয়েও বড় ছিল কী না।