পাঁচ বছর ধরে পেটের ব্যথায় (Pain) ভুগছিলেন ৩০ বছরের হর্ষিনা (Harshina)। একের পর ডাক্তার দেখিয়েছেন, অ্যান্টিবায়োটিক খেয়েছেন। তবুও সারেনি ব্যথা। গত ৬ মাস ধরে ব্যথা অসহ্য হয়ে উঠেছিল একেবারে। তাই ডাক্তাররা তাঁকে কড়া অ্যান্টিবায়োটিক দিয়েছিলেন। যদিও তাতে ফল মেলেনি। ব্যথায় কাহিল হর্ষিনা এরপর বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে চেক-আপ করান। তাঁর পেটে স্ক্যান (Scan) করা হয়। সেই রিপোর্ট পেতেই চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায় ডাক্তারদের। তাঁর পেটে ধাতব বস্তু (Metal Object) থাকার কথা জানানো হয় রিপোর্টে। আর সেই ধাবত বস্তু হল অপারেশনের সময় ব্যবহার করা একজোড়া ফোরসেপ (Forceps) বা কাঁচি।
২০১৭ সালে কোঝিকোড় মেডিক্যাল কলেজে (Kozhikode Medical College) তৃতীয়বার সিজারিয়ান (Caesarean) অপারেশন হয় হর্ষিনার। অপারেশনের পর ফোরসেপ ভুল করে পেটেই রেখে দেন চিকিৎসকরা। গত মাসের ১৭ সেপ্টেম্বর ওই হাসপাতালের চিকিৎসকরাই অপারেশন করে ফোরসেপ দু'টি বের করেন। গত পাঁচ বছর ধরেই হর্ষিনার পেট ব্যথার কারণ ছিল ওই দু'টি ফোরসেপই। এটি হল কাঁচির মতো সরঞ্জাম, যা চিকিৎসকরা অপারেশনের সময় রক্তপাত আটকাতে ব্যবহার করেন।
২০১৭ সালে কোঝিকোড় মেডিক্যাল কলেজে তৃতীয়বার সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়েছিল হর্ষিনার। এর আগের দু'বার বেসরকারি হাসপাতালে করা হয়েছিল। তিনি বলেন, 'তৃতীয় সিজারিয়ানের পর আমি তীব্র ব্যথা অনুভব করতে শুরু করি। আমি ভেবেছিলাম এটা সার্জারির কারণে হয়েছে। আমি অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি। ধাতব বস্তুটি আমার মূত্রথলিতে খোঁচা দিচ্ছিল এবং সংক্রমণ ঘটাচ্ছিল। ব্যথা অসহ্য হয়ে উঠেছিল।'
পাঁচ বছর আগে অপারেশনের সময় শরীরে ফোরসেপ রেখে যাওয়ার জন্য ওই ডাক্তারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন হর্ষিনা। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীনা জর্জ (Kerala State Health Minister Veena George) শনিবার ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। স্বাস্থ্য সচিবকে শীঘ্রই রিপোর্ট জমা দিতে বলেছেন। মন্ত্রী বলেন, 'যারা দায়ী, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' কোঝিকোড় মেডিক্যাল কলেজও তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।