প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সের মধ্যে কথোপকথনের সময়ে বাণিজ্য নিয়ে কোনও রকম আলোচনা হয়নি। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময়েও আমেরিকার স্টেট সেক্রেটারি মার্কো রুবিও এই নিয়ে এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেননি। সরকারি সূত্র মারফত এমনই খবর পাওয়া যাচ্ছে।
এদিকে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করে বসে আছেন, ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সমঝোতা তিনিই করিয়েছেন। একটি নেপথ্য কাহিনিও দুনিয়াকে জানিয়েছেন ট্রাম্প। তাঁর বক্তব্য, 'ওদের বলেছিলাম যুদ্ধ না থামালে কারও সঙ্গে ব্যবসা করব না।'
পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গি ঘাঁটি তছনছ করতে ভারত শুরু করেছে 'অপারেশন সিঁদুর'। তারপর ভারতে পাল্টা আঘাত শুরু করে পাকিস্তান। এই আবহে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়। গত ৯ মে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা বলেন। একইসঙ্গে স্টেট সেক্রেটারি মার্কো রুবিও ফোন করেন এস জয়শঙ্কর এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালকে। তবে ইন্ডিয়া টুডে-কে সরকারি সূত্র জানিয়েছেন, এই ফোনকলে কোথাও বাণিজ্যের কথা উল্লেখ করা হয়নি।
প্রসঙ্গত, আমেরিকা ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য সঙ্গী। ২০২৪ সালের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য হয়েছি ১২৯.২ বিলিয়ন ডলারের। অন্যদিকে, পাকিস্তান এবং আমেরিকার মধ্যে গত বছর বাণিজ্য হয়েছিল ৭.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের।
জাতির উদ্দেশে সোমবার রাতে নরেন্দ্র মোদীর ভাষণের আগেই ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি বোমা ফাটিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, 'ভারত এবং পাকিস্তানের সঙ্গে অনেক ব্যবসা করবে আমেরিকা।' ট্রাম্প দাবি করেছেন যে তার মধ্যস্থতার কারণেই দুই দেশের মধ্যে সম্ভাব্য পারমাণনু যুদ্ধ এড়ানো সম্ভব হয়েছে এবং এই যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য তিনি নিজেকে নিয়ে গর্বিত। বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, আমেরিকার পক্ষ থেকে ট্রাম্পের এই দাবি ইঙ্গিত দেয় যে বিশ্বব্যাপী পারমাণবিক শক্তিগুলি দক্ষিণ এশিয়ার পরিস্থিতি সম্পর্কে অত্যন্ত সতর্ক এবং যেকোনও মূল্যে পরমাণু যুদ্ধ ঠেকাতে চায়।
ট্রাম্প আরও বলেন, 'আমি অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমরা একটি যুদ্ধবিরতি করিয়েছি। আমরা উভয় দেশের সঙ্গে বাণিজ্য করব এবং পরমাণু সংঘাত রোধ করব।'
যদিও জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে কোথা একবারের জন্যও সংঘর্ষবিরতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেননি মোদী। তিনি জানান, পাকিস্তান ভারতের আঘাতে দিশেহারা হয়ে গোটা বিশ্বের কাছে কাকুতি-মিনতি করেছে এবং শেষ পর্যন্ত ভারতের DGMO-কে ফোন করে সংঘর্ষবিরতির কথা জানানো হয়েছে।
ভারতের তরফেও আনুষ্ঠানিক সংঘর্ষবিরতির ঘোষণায় কোথাও আমেরিকা কিংবা ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতার কথা উল্লেখ নেই।