
দিল্লি বিস্ফোরণ নিয়ে এবার চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এল। ইন্ডিয়া টুডে-কে এক সূত্র জানিয়েছে, ডা: উমর নবি ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের বার্ষিকীর দিন বড় ব্লাস্টের ছক কষেছিল।
ফরিদাবাদে গড়ে ওঠা 'জইশ-ই-মহম্মদ হোয়াইট কলার মডিউল'-এর সঙ্গে লিঙ্ক থাকা ৮ জনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্তকারীরা। কথা বলা হয়েছে তাদের পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গেও। আর তাতেই উঠে এসেছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
২৮ বছরের ডা: উমর নবিই i20 গাড়ি নিয়ে লালকেল্লার সামনে বিস্ফোরণ ঘটনায়। পুলওয়ামার এই বাসিন্দাই ১২ জন নিরীহর মৃত্য়ুর জন্য মূল দায়ী বলে উঠে আসছে তদন্তে। এই যুবক কাশ্মীর, হরিয়ানা এবং উত্তরপ্রদেশে ঘোরাফেরা করত। তবে তার প্ল্যান ভেস্তে যায় সঙ্গী ডা: মুজাম্মিল শাকিল ধরা পড়ায়। এই মুজ্জামিল আল-ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। তার ঘর থেকে উদ্ধার হয় ৩৬০ কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট। মনে করা হচ্ছে, এই গ্রেফতারির পর উমর প্যানিক করে যায় এবং বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি নিয়ে লালকেল্লার সামনে পৌঁছে যায়।
সূত্রের খবর, উমর অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিল তবে বেশিরভাগ সময়েই চুপচাপ থাকত। ডা: শাকিলের সঙ্গে তুরস্ক গিয়েছিল ২০২১ সালে। তারপর থেকেই নীতি-আদর্শ বদলে যায় তার। সে সময়ে তুরস্ক জইশ-ই-মহম্মদের নিষিদ্ধ হওয়া কিছু নীচুস্তরের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ হয় তাদের। ফেরার পর উমর ধীরে ধীরে অস্ত্র এবং বোমা তৈরির সরঞ্জাম যেমন, অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, পটাশিয়াম নাইট্রেট এবং সালফার জোগাড় করতে শুরু করে। সেগুলি আল-ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়েই লুকিয়ে রাখত সে। তদন্তকারীদের অনুমান, উমর এমন একটি বিস্ফোরক বানাচ্ছিল যা গাড়িতে লাগানো যায়। অনলাইনে পাওয়া সোর্স থেকেই এটি তৈরি করা শিখছিল সে।
গত ১০ নভেম্বর ফরিদাবাদ পুলিশের ২ হাজার ৯০০ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধারের খবর প্রকাশ্যে আসতেই উমর প্যানিক করে গিয়েছিল বলে অনুমান। দিল্লির একটি মসজিদে বেশ কয়েক ঘণ্টা বসেছিল সে। তারপরই গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। গাড়িতে অর্ধেক তৈরি হওয়া বিস্ফোরক ছিল সঙ্গে। সেটি সঠিক ভাবে ইনস্টলও করা ছিল না বলে খবর।
যে ৮ জনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে ৭ জনই কাশ্মীরের বাসিন্দা। আরিফ নিসার দর ওরফে শাহিল, ইয়াসির-উল-আশরফ, মকসুদ আহমেদ দর ওরফে শহিদ শ্রীনগরের নওগাঁ এলাকার বাসিন্দা। মৌলবি ইরফান আহমেদ সোপিয়ানের বাসিন্দা, জমির আহমেদ আহনগড় ওরফে মুতলাশা গন্দেরবল এলাকার বাসিন্দা, ডা: মুজাম্মিল শাকিল পুলওয়ামার এবং ডা: আদিল আহমেদ কুলগাঁওয়ের বাসিন্দা। অষ্টম ধৃত ডা: শাহিন শহিদ লখনউয়ের বাসিন্দা।
তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন গত ২৬ অক্টোবর উমর কাশ্মীর গিয়েছিল। পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ফরিদাবাদে ফেরে সে। তাদের জানিয়েছিল আগামী ৩ মাস তার সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করা যাবে না। সম্ভবত সে অনুমান করেছিল, বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যাবে সে।
গোটা ঘটনার সূত্রপাত হয় ১৯ অক্টোবর। শ্রীনগরে জইশ-ই-মহম্মদের একটি পোস্টার পড়েছিল সেখানে। CCTV ফুটেজ ধরে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল ডা: শাকিলকে।