ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইটে যোগাযোগ করে বিয়ে করতে গিয়ে প্রতারণার মুখে পড়েছেন অনেকেই। এবার প্রতারণার শিকার হলেন উত্তরপ্রদেশের লেডি সিংঘম নামে পরিচিত ডেপুটি এসপি শ্রেষ্ঠা ঠাকুর। একজন ভুয়ো IRS অফিসারকে বিয়ে করে লক্ষাধিক টাকা প্রতারণার শিকার হয়েছেন তিনি। এই ঘটনা জানার পর প্রতারককে ডিভোর্স দেন শ্রেষ্ঠা। কিন্তু সেই ভুয়ো আইআরএস স্ত্রীর নামে পালটা প্রতারণার মামলা করেন। শ্রেষ্ঠা গাজিয়াবাদের কৌশাম্বি থানায় প্রাক্তন স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
নির্যাতিতা মহিলা পুলিশ অফিসারের নাম শ্রেষ্ঠা ঠাকুর। ২০১২ ব্যাচের আইপিএস অফিসার। বর্তমানে উত্তরপ্রদেশের শামলিতে তিনি কর্মরত। শ্রেষ্ঠা ঠাকুর দক্ষ পুলিশ অফিসার হিসেবে পরিচিত। লোকে তাঁকে লেডি সিংহাম নামেও চেনে। গাজিয়াবাদের কৌশাম্বি থানায় শ্রেষ্ঠার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে রোহিত রাজ নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইটের মাধ্যমে রোহিতের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। সেই ব্যক্তি নিজেকে ২০০৮ সালের ব্যাচের একজন আইআরএস অফিসার হিসেবে পরিচয় দেন। জানান, তিনি রাঁচিতে ডেপুটি কমিশনার হিসাবে কর্মরত।
জানা যায়, ২০০৮ সালে রোহিত রাজ নামে একজন ব্যক্তি আইআরএস-এর জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। রাঁচিতে ডেপুটি কমিশনার হিসাবে তাঁর পোস্টিংও হয়েছিল। আর এই তথ্যে বিশ্বাস করে নেন শ্রেষ্ঠা ঠাকুর ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। তারপরই রোহিত ও শ্রেষ্ঠার বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের পর যখন সত্যিটা সামনে আসে। শ্রেষ্ঠা জানতে পারেন, তাণর স্বামী আইআরএস অফিসার নন। একজন প্রতারক মাত্র। এভাবে প্রতারণা করে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করেন সেই ব্যক্তি।
এদিকে বিয়ের দুই বছর পরও স্বামীকে কুকর্ম থেকে বিরত করতে পারেননি শ্রেষ্ঠা। এতে বিরক্ত হয়ে ডেপুটি এসপি শ্রেষ্ঠা ঠাকুর রোহিত রাজকে ডিভোর্স দেন। তারপরও প্রতারণা চক্র সক্রিয় রাখে রোহিত। একাধিক মহিলাকে ফাঁসান তিনি। নিজের মিথ্যে পরিচয় দিয়ে আয় করতে থাকেন। বর্তমানে রোহিত গাজিয়াবাদের কৌশাম্বি থানা এলাকায় বসবাস করে। অন্যদিকে রোহিতের নামে একের পর এক অভিযোগ পেতে শুরু করেন শ্রেষ্ঠা। তখন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন তিনি। রোহিতকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গোটা ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে।
এই শ্রেষ্ঠা উত্তরপ্রদেশে লেডি সিংঘম নামে পরিচিত। তিনি কেন পুলিশ অফিসার হন, তার গল্পও বেশ মজার। শ্রেষ্ঠা জানান, তিনি কানপুরে পড়াশোনা করতেন। সেই সময় দুষ্কৃতীরা অনেক মেয়ের শ্লীলতাহানি করত। সেই সময় শ্রেষ্ঠা থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও তা গুরুত্ব দেওয়া হত না। এরপর সিদ্ধান্ত নেন, তিনি নিজেই একজন পুলিশ অফিসার হবেন। তার পরিবার তাঁকে পূর্ণ সমর্থন করে। ২০১২ সালে ইউপি পিসিএস পরীক্ষায় কৃতকার্য হন। এরপর তিনি ডিএসপি হন। তিনি উত্তরপ্রদেশের বিখ্যাত পুলিশ অফিসারদের মধ্যে একজন।