
দক্ষিণ ত্রিপুরার বেলোনিয়ায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নিরাপত্তা খতিয়ে দেখলেন ভারতীয় সেনার ইস্টার্ন কমান্ডের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আর সি তিওয়ারি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন একাধিক শীর্ষ সেনা আধিকারিক। সীমান্তে নজরদারি, অপারেশনাল প্রস্তুতি এবং সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেন তাঁরা। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে এই সফরকে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
সেনা সূত্রে খবর, বেলোনিয়া সীমান্তে নজরদারি ব্যবস্থা, সেনা মোতায়েন এবং আপদকালীন প্রতিক্রিয়ার প্রস্তুতি নিয়ে বিস্তারিত পর্যালোচনা করেন সেনাকর্তারা। সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও সেনার তরফে জানানো হয়েছে। যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত; এই বার্তাই দেওয়া হয়েছে উচ্চপর্যায়ের এই সফরের মাধ্যমে।
বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচনের আগে যে আঞ্চলিক উত্তেজনার আবহ তৈরি হয়েছে, তাই নিয়েও আলোচনা করেন সেনাকর্তারা। বাংলাদেশে বর্তমানে রীতিমতো বিক্ষোভের আবহ। ছাত্রনেতা শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা তুঙ্গে। গত বছর ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম মুখ ছিলেন ওই ছাত্রনেতা। ঢাকায় একটি মসজিদ থেকে বেরোনোর সময় মুখোশধারী বন্দুকবাজদের হামলায় গুরুতর জখম হয়েছিলেন তিনি। সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। শুক্রবার তাঁর দেহ আনা হয় ঢাকায়।
হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় শোক ক্ষোভে পরিণত হয়। একাধিক জায়গায় ভাঙচুর চালানো হয়েছে। অভিযোগ, ভারত-ঘনিষ্ঠ দাবি করে কিছু সংবাদমাধ্যমের দফতরও হামলা করা হয়েছে। এই আবহে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করছে বিএসএফ।
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে আশ্রিত। বিক্ষোভকারীদের একাংশের দাবি, হাদি হত্যার সঙ্গে যুক্ত অভিযুক্তরা ভারতে রয়েছে। যদিও এই অভিযোগের সারবত্তা এখনও প্রমাণিত হয়নি।
এই সমস্ত ঘটনার প্রেক্ষিতেই ইস্টার্ন কমান্ড প্রধানের সীমান্ত সফর গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে কূটনৈতিক ও প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁদের মতে, এটি শুধুমাত্র একটি রুটিন পরিদর্শন নয়, বরং সীমান্তে প্রস্তুতি যাচাই এবং পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখার স্পষ্ট বার্তা। স্থলসীমান্তে যাতে কোনও ধরনের অস্থিরতা বা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে, সে দিকেই আপাতত সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে ভারতীয় সেনা।