রাজনৈতিক দলগুলিতে অনুদানের জন্য নির্বাচনী বন্ডের আবেদনের শুনানির আগে, ভারতের অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটারমনি সুপ্রিম কোর্টকে বলেন যে সংবিধান জনসাধারণকে এই তহবিলের উৎস জানার মৌলিক অধিকার প্রদান করেনি। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চের সামনে ৩১ অক্টোবরের শুনানির আগে, ভেঙ্কটরমনি বলেন যে এই প্রকল্পটি কোনও ব্যক্তির বিদ্যমান অধিকার লঙ্ঘন করে না। এছাড়াও, এটি তৃতীয় অংশের অধীনে কোনো অধিকারের বিরুদ্ধে বলা যাবে না।
অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরমনি বলেছেন, বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা হল আরও ভাল বা ভিন্ন ব্যবস্থার পরামর্শ দেওয়ার লক্ষ্যে রাষ্ট্রের নীতি পর্যালোচনা করা নয়। তিনি বলেন, ২০০৩ সালে পিপলস ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিজ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের যুগান্তকারী রায়ে ভোটারদের একটি সচেতন পছন্দ করতে সক্ষম করার জন্য প্রার্থীদের তাদের অপরাধমূলক ইতিহাস ঘোষণা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
একজন প্রার্থীর অপরাধমূলক ইতিহাস জানার অধিকার, যা প্রার্থী পছন্দের ক্ষেত্রে উপযোগী এবং প্রাসঙ্গিক হতে পারে, বর্তমান মামলার সঙ্গে তুলনা করা যায় না বা কিছু এবং সবকিছু জানার সাধারণ অধিকারের সঙ্গে তুলনা করা যায় না। তিনি বলেন যে নির্বাচনী বন্ড নীতি তহবিলকারীদের গোপনীয়তার সুবিধা প্রদান করে। এটি বিদ্যমান কোনো অধিকার লঙ্ঘন করে না।
রাজনৈতিক দলগুলিতে অনুদানের জন্য নির্বাচনী বন্ড প্রকল্পের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে ৩১ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের ৫- বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে৷ নির্বাচনী বন্ড প্রকল্পটি ২ জানুয়ারি ২০১৮-এ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। নির্বাচনী তহবিলে স্বচ্ছতা আনার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে রাজনৈতিক দলগুলোকে নগদ অনুদানের বিকল্প হিসেবে এটি চালু করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত মামলার শুনানি শুরু হতে চলেছে সাংবিধানিক বেঞ্চে। এরই মাঝে কেন্দ্রের তরফ থেকে অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরমনি রবিবার শীর্ষ আদালতকে বললেন, 'নির্বাচনী বন্ডের টাকা কোথা থেকে আসছে, তা জানার অধিকার আম নাগরিককে দেয়নি সংবিধান।' এই আবহে শীর্ষ আদালত যাতে এই মামলায় 'নাক না গলায়', সেই বার্তাই দিতে চাইলেন অ্যাটর্নি জেনারেল। এর আগে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এই মামলায় পর্যবেক্ষণ দিয়েছিলেন, এই মামলাটির গুরুত্ব বিবেচনা করে আমরা মনে করছি যে বৃহত্তর বেঞ্চেরই এই নিয়ে চূড়ান্ত রায় দেওয়া উচিত। সেই মতো ফের ৩১ অক্টোবর থেকে শুরু হবে এই মামলার শুনানি। এর আগে সুপ্রিম কোর্টকে এই ইস্যু থেকে দূরে থাকার বার্তা দিল কেন্দ্র।